পূর্ব এশিয়ায় উত্তেজনার পারদ যেন কমছেই না। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সম্প্রতি এই অঞ্চলে সফর করে ফিরে যাওয়ার পর দিন কয়েক আগেই একে একে তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছিল উত্তর কোরিয়া। আর এবার একসঙ্গে ৮টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে কিম জং উনের এই দেশটি।
মূলত দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র চার বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে মার্কিন বিমানবাহী রণতরী নিয়ে প্রথম সম্মিলিত সামরিক মহড়া চালানোর একদিন পর নিজেদের পূর্ব উপকূলে পিয়ংইয়ং রোববার (৫ জুন) স্বল্প-পাল্লার এসব ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। রোববার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনীর জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ের সুনান এলাকা থেকে স্বল্প-পাল্লার এসব ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়। অন্যদিকে জাপানের বার্তাসংস্থা কিয়োডো একটি সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, উত্তর একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে।
রয়টার্স বলছে, ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের এই ঘটনাকে উত্তর কোরিয়া বিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ প্রতিনিধি সুং কিমের সিউল সফরের জবাব হিসেবেও মনে করা হচ্ছে। মার্কিন এই বিশেষ প্রতিনিধি শনিবার সিউল ত্যাগ করেন।
২০১৭ সালের পর উত্তর কোরিয়া প্রথমবারের মতো পারমাণবিক পরীক্ষা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জল্পনা রয়েছে। রয়টার্স বলছে, পিয়ংইয়ংয়ের সম্ভাব্য পারমাণবিক পরীক্ষার লক্ষণগুলোর মধ্যেই প্রস্তুতির জন্য শুক্রবার নিজের দক্ষিণ কোরীয় ও জাপানি সমকক্ষ কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করেন সুং কিম।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে উত্তর কোরিয়া তার বৃহত্তম আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম)-সহ একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে। রোববারের আগে গত ২৫ মে সর্বশেষ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালায় উত্তর কোরিয়া। সেসময় বাইডেন পূর্ব এশিয়া ত্যাগ করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই একে একে তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছিলেন কিম।
এই পরিস্থিতিতে গত সপ্তাহে উত্তর কোরিয়ার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের জন্য দেশটির ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা দিতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানায় যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু ওয়াশিংটনের এই প্রস্তাবে ভেটো দেয় চীন ও রাশিয়া।
এর আগে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে সাত দফায় ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছিল পিয়ংইয়ং। উত্তর কোরিয়ার মতো অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত দেশ কীভাবে একের পর এক এমন পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে, তা নিয়ে বহু প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।
যদিও একের পর এক পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষার জন্য উত্তর কোরিয়ার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ একাধিক দেশ।