পূর্ব ইউক্রেনের ডনবাস অঞ্চলে তীব্র হামলা চালাচ্ছে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী। রুশ সেনাদের জোরদার এই হামলার মুখে ডনবাসের লুহানস্ক অঞ্চল থেকে পিছু হটতে হতে পারে ইউক্রেনীয় সেনাদের। শুক্রবার (২৭ মে) এমন তথ্যই জানিয়েছে পূর্ব ইউরোপের এই দেশটি। শনিবার (২৮ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোরে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়ান সৈন্যরা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে ইউক্রেনে এই হামলা শুরু করে। একসঙ্গে তিন দিক চলা রাশিয়ার সর্বাত্মক এই হামলা সম্প্রতি গড়িয়েছে চতুর্থ মাসে।
রাশিয়া অবশ্য তিনমাস ধরে সামরিক অভিযান চালালেও রুশ সেনারা প্রাথমিকভাবে প্রায় পুরো ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডে হামলা পরিচালনা করে। তবে পরে সেই অবস্থান থেকে সরে এসে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী মূল মনোযোগ দেয় ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় ডনবাস এলাকায়। মূলত তখন থেকে এই অঞ্চলে ব্যাপক গোলাবর্ষণ করে যাচ্ছে রুশ সেনারা।
আরও স্পষ্ট করে বললে, রুশ-ভাষী মানুষকে রক্ষা এবং রাশিয়াপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের রক্ষার কথা বলে দোনেতস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চল নিয়ে গঠিত ডনবাস ভূখণ্ড দখলের চেষ্টা করছে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী। আর এতেই রুশ সেনাদের ব্যাপক গোলাবর্ষণে বিধ্বস্ত হচ্ছে ইউক্রেনের এই শিল্প এলাকা।
বিবিসি বলছে, ইউক্রেনের পক্ষ থেকে সেনা প্রত্যাহার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ডনবাসের লুহানস্ক এবং দোনেতস্ক অঞ্চল সম্পূর্ণরূপে দখল করার লক্ষ্যের কাছাকাছি নিয়ে আসতে পারে। এছাড়া রুশ বাহিনী এই অঞ্চলে আরও ভূখণ্ড ইউক্রেনের কাছ থেকে দখলে নিয়েছে।
লুহানস্কের গভর্নর সেরহি গাইদাই বলেছেন, কয়েকদিন ধরে ইউক্রেনীয় বাহিনীকে আটকে রাখার চেষ্টা করার পর রাশিয়ান সৈন্যরা ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে থাকা ডনবাস অঞ্চলের বৃহত্তম শহর সিভিয়ারোদোনেতস্কে প্রবেশ করেছে। রুশ হামলায় শহরের ৯০ শতাংশ ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও জানান তিনি।
সিভারস্কি ডোনেতস নদীর তীরজুড়ে অবস্থিত সিভিয়ারোদোনেতস্ক এবং লিসিচানস্ক শহরকে উল্লেখ করে টেলিগ্রামে গাইদাই বলেন, ‘বিশ্লেষকদের করা ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী রাশিয়ানরা আগামী দিনে লুহানস্ক অঞ্চল দখল করতে পারবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের আত্মরক্ষার জন্য পর্যাপ্ত শক্তি এবং সরঞ্জাম থাকবে। তবে এটিও সম্ভব যে, রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর হাতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়া এড়াতে আমাদের পিছু হটতে হবে।’
রাশিয়াপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদী যোদ্ধারা বলছে, তারা এখন সিভিয়ারোদোনেতস্কের পশ্চিমে রেলওয়ে কেন্দ্র বলে পরিচিত লাইমান নিয়ন্ত্রণ করছে। তবে ইউক্রেন বলেছে, রাশিয়া লাইমানের বেশিরভাগ অংশ দখল করলেও ইউক্রেনীয় বাহিনী রুশ বাহিনীকে দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত স্লোভিয়ানস্ক শহরের দিকে অগ্রসর হতে বাধা দিচ্ছে।