রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যকার যুদ্ধ ভারতীয় কৃষকদের সমস্যায় ফেলেছে। এ যুদ্ধের ফলে বিশ্ববাজারে সারের দাম ৪০ শতাংশ বেড়েছে, যার সরাসরি প্রভাব পড়বে কৃষকদের ওপর। কৃষকদের এই সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে ভারত সরকারকে চলতি অর্থবছরে সারে প্রায় দুই লাখ কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হবে।
রাশিয়া এবং ইউক্রেনের এই যুদ্ধ ভারত সরকারের ওপর অর্থনৈতিক বোঝা বাড়িয়েছে। এই যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট সংকট বিশ্বব্যাপী অনেক ক্ষেত্রেই প্রভাব ফেলেছে। বিশ্ববাজারে সারের দাম ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, যার সরাসরি প্রভাব পড়বে ভারতীয় কৃষকদের ওপর।
রাশিয়া থেকে সারের বর্ধিত দাম কৃষকদের ওপর অর্থনৈতিক বোঝা বাড়াবে। তবে এই বর্ধিত দামের বোঝা থেকে কৃষকদের বাঁচাতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার সারে ভর্তুকি দ্বিগুণ করতে পারে। বলা হচ্ছে, কেন্দ্রীয় সরকার সারে এবার কৃষকদের ২ লাখ কোটি টাকা ভর্তুকি দেওয়ার কথা ভাবছে। অর্থাৎ সরকার এতে অতিরিক্ত ১ লাখ কোটি টাকা ভর্তুকি দেবে।
বাজেটে বিধান রাখা হয়েছে
এর আগে, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট পেশ করার সময়, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন চলতি অর্থবছরের জন্য সারের ওপর ১ লাখ কোটি টাকা ভর্তুকি ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু, ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহ থেকে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। আর এখন ভারত যে সার আমদানি করে তার দাম বিশ্ববাজারে অনেক বেড়ে গেছে। এমতাবস্থায় কৃষকদের পক্ষে এই মূল্য পরিশোধ করা সহজ নয়, তাই সরকার সার ভর্তুকি ১ লাখ কোটি টাকা বাড়াতে পারে।
এর আগে, ৩১ মার্চ, সরকার সারের ওপর ভর্তুকির পরিমাণ বাড়িয়ে ১.৪০ লাখ কোটি টাকা করেছিল, কিন্তু এই ভর্তুকি কৃষকদের জন্য যথেষ্ট হবে না। এমন পরিস্থিতিতে সরকার ৬০ হাজার কোটি টাকা বাড়িয়ে এখন ২ লাখ কোটি টাকা ভর্তুকি দেওয়ার কথা ভাবছে।
ভারত সরকার ডি অ্যামিনো ফসফেট (ডিএপি) ইউরিয়ার মতো প্রচুর পরিমাণে সারের কাঁচামাল আমদানি করে। রাশিয়া ও ইউক্রেনেরও এতে বড় অংশীদারিত্ব রয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে উভয় দেশের পণ্য সরবরাহে বাধার কারণে বিশ্ববাজারে সারের দাম প্রায় ৪০ শতাংশ বেড়েছে। অর্থাৎ কৃষকদের ওপর অর্থনৈতিক বোঝা বেড়েছে।
আসলে ইউরিয়া তৈরিতে সবচেয়ে বেশি খরচ হয় গ্যাসে। আর এই সময়ে বিশ্বব্যাপী গ্যাসের দাম ক্রমাগত বাড়ছে। আর সারের দাম বাড়ার সবচেয়ে বড় কারণ গ্যাসের দাম বৃদ্ধি। এ জন্যই সরকারকে ভর্তুকি খরচ বাড়াতে হবে যাতে কৃষকদের জন্য বোঝা না হয়।
সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তার মতে, এই সমস্যা মোকাবিলায় সরকার প্রস্তুতি নিয়েছে। সরকার বিপুল পরিমাণ সার মজুদ করেছে। এর আওতায় এ পর্যন্ত ৩০ লাখ টন ডিএপি ও ৭০ লাখ টন ইউরিয়া সংগ্রহ করা হয়েছে। এ ছাড়া ভারত সরকারও এ ক্ষেত্রে স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আশা করা হচ্ছে ভবিষ্যতে সার আমদানির ওপর ভারতের নির্ভরতা কমবে।