ইউক্রেনে অত্যাধুনিক জৈব ও রাসায়নিক অস্ত্র তৈরি প্রকল্পে যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা করেছিল বলে স্বীকার করেছে দেশটির প্রেসিডেন্টের কার্যালয় হোয়াইট হাউস। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে এই স্বীকারোক্তি দেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সাকি বলেন, ‘হ্যাঁ, আমরা এই প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ ইউক্রেনে পাঠিয়েছিলাম। কারণ, আমাদের শঙ্কা ছিল— রাশিয়া যে কোনো সময় ইউক্রেনে অত্যাধুনিক জৈব বা রাসায়নিক অস্ত্রের হামলা চালাতে পারে।’
‘সম্ভাব্য সেই হামলা থেকে ইউক্রেনের সুরক্ষা নিশ্চিত করতেই দেশটিতে জৈব ও রাসায়নিক অস্ত্র নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরুর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল এবং এ বিষয়ক সহায়তা দেওয়া হয়েছিল।’
রাশিয়া ইউক্রেনে জৈব বা রাসায়নিক অস্ত্রের হামলা করতে পারে— এমন কোনো প্রমাণ যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ছিল কিনা— সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের কোনো উত্তর দেননি হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি। তবে গত সপ্তাহে দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনীর এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, ইউক্রেনে নিকট বা দূর ভবিষ্যতে রাশিয়া জৈব কিংবা রাসায়নিক অস্ত্র ব্যাবহার করতে পারে— এমন কোনো প্রমাণ তারা এখনও পাননি।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রুশ বাহিনী; কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে মস্কো অভিযোগ জানিয়ে আসছে যে— যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে অত্যাধুনিক জৈব ও রাসায়নিক অস্ত্র তৈরিতে সহায়তা করছে।
সম্প্রতি দেশটিতে রুশ অভিযান শুরু হওয়ার পর জরুরি ভিত্তিতে এসব গবেষণাগার ধ্বংসের নির্দেশ দেয় ইউক্রেনের সরকার এবং তাতে আরও দৃঢ় হয় মস্কোর সন্দেহ।
গত ১২ মার্চ এ বিষয়ক দু’টি নথি প্রকাশ করে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। সেই নথিগুলোতে পর্যালোচনা করে জানা যায়, ২০০৫ সাল থেকে ইউক্রেনের জৈব ও রাসয়ানিক অস্ত্র প্রকল্পে অর্থায়ন করছে যুক্তরাষ্ট্র।
ওয়াশিংটন এবং কিয়েভ অবশ্য বরাবরই মস্কোর এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে; কিন্তু রাশিয়া সেই নথি উদ্ঘাটনের পর ইউক্রেনে গবেষণাগার নির্মাণে ওয়াশিংটনের অর্থায়নের ব্যাপারটি স্বীকার করেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্ডার সেক্রেটারি ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড । তবে সেসব গবেষণাগারে জৈব অস্ত্র নিয়ে কোনো গবেষণা হতো না বলে দাবি করেছিলেন ন্যুল্যান্ড।
অবশেষে শুক্রবার এ বিষয়ে সঠিক ও পূর্ণ স্বীকারোক্তি দিলেন জেন সাকি।
সূত্র: রয়টার্স