দেশে ডেন্টাল চিকিৎসকের সংকট রয়েছে উল্লেখ করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, দেশে ডেন্টাল চিকিৎসকদের জন্য ডেন্টাল সার্ভিসে ৬৫০টি নতুন পদ তৈরি করা হয়েছে। শিগগিরই নিয়োগ কার্যক্রম শুরু হবে। এছাড়াও রাজশাহী ও চট্টগ্রামে দুটি ডেন্টাল ইউনিটকে ডেন্টাল কলেজের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
রোববার (২০ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিশ্ব ওরাল হেলথ দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ ডেন্টাল সোসাইটি কর্তৃক আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, সব চিকিৎসাই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ডেন্টাল চিকিৎসা নিয়ে আমরা অবহেলা করি। আমাদের দেহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো মুখ ও দাঁত। এটি শুধু চেহারাকেই সুন্দর করে না, সুস্থ থাকতেও মানুষকে সহায়তা করে।
জাহিদ মালেক বলেন, দাঁতের কী মর্ম সেটি আমরা বুঝি না। কিন্তু দাঁতে ব্যথা হলেই দাঁতের মর্ম বুঝা যায়। আমরা দাঁত নিয়ে সচেতন নই। পরিষ্কার রাখি না, নিয়মিত ব্রাশ করি না। ডেন্টাল চিকিৎসক যারা আছেন, তারা মানুষকে অবশ্যই দাঁতের গুরুত্ব তুলে ধরবেন।
তিনি বলেন, তামাক ও পান-সুপারির কারণে দাঁতে নানা রোগ হয়। ক্যান্সার হয়। মুখ ও গলার ক্যান্সার তামাকের কারণে হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে ডেন্টাল চিকিৎসকরা ভূমিকা রাখতে পারেন।
মন্ত্রী আরও বলেন, প্রতিটি বিভাগেই মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হবে, সে লক্ষ্যে কাজ শুরু হয়েছে। ডেন্টাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীকে বলব। এর আগে একটি ডেন্টাল ইনস্টিটিউট হতে হতে পারে, এটি নেই। কিডনি, চক্ষু আছে। এটি হলে চিকিৎসা ও শিক্ষার মান বৃদ্ধি পাবে। এটি আমি নিজেই করে দিতে পারব। আশ্বস্ত করতে চাই, দেশে একটি ডেন্টাল ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, উপজেলা হাসপাতালে মাত্র একজন ডেন্টাল সার্জন রয়েছেন, কিন্তু সেখানে পাঁচ লাখেরও বেশি লোক বসবাস করেন। সেখানে এতো মানুষকে সেবা দেওয়া দুষ্কর। জনবল ও যন্ত্রপাতি আধুনিকায়নের ব্যবস্থা করব।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে লেখাপড়া শুরু হয়েছে, যদিও করোনার কারণে দীর্ঘ দিন স্কুল-কলেজ বন্ধ ছিল। সামাজিক-রাজনৈতিক অনুষ্ঠানও করোনার জন্য বন্ধ ছিল, সেটিও চালু হয়েছে। করোনা নিয়ন্ত্রণে অনেক কাজ করতে হয়েছে। শুরুতে একটিমাত্র ল্যাব ছিল, এখন সাড়ে ৮০০টি। ১২০টি সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন স্থাপন করেছি।
তিনি আরও বলেন, করোনা সংক্রমণ মোকাবিলায় চিকিৎসক-নার্সসহ ৩০ হাজার লোক নিয়োগ দিয়েছি। ফলে করোনায় মৃত্যু কম। পৃথিবীর কম দেশই আছে করোনায় মৃত্যু শূন্যতে। বাংলাদেশে সেটি সম্ভব হয়েছে। সংক্রমণও এক শতাংশের নিচে চলে এসেছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। যেন করোনা আবারও বৃদ্ধি না পায়।
টিকা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, করোনারোধে বিদেশ থেকে টিকা এনে ২২ কোটি টিকা দিয়েছি। সম্মুখসারীর যোদ্ধাদের শতভাগ টিকা দেওয়া হয়েছে। সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার কমেছে। ফলে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারছি।
যারা টিকাকে যমুনার পানি বলেছিল, তারাই আগে টিকা নিয়েছে। করোনার সময়ে বাংলাদেশেই চিকিৎসা নিয়েছে, উল্লেখ করেন জাহিদ মালেক।
টিকা ক্যাম্পেইন প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, গত ১৭ মার্চ থেকে শুরু হওয়া টিকা ক্যাম্পেইন এ মাসের শেষ পর্যন্ত চলবে। এ সময়ের মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিয়ে নেবেন। যাদের বুস্টার ডোজের সময় হয়েছে, তারা এসে বুস্টার ডোজ নিয়ে যাবেন। নিজে ও পরিবারকে সুরক্ষিত রাখবেন।