স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) পদের চাকরি জাতীয়করণের বিষয়ে হাইকোর্টের আদেশ সংশোধন (মোডিফাই) করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। আদালত সিএইচসিপিদের চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তরে হাইকোর্টের রায় সংশোধন করে তাদের চাকরি ‘কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট আইন, ২০১৮’ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।
রোববার (৬ মার্চ) রাষ্ট্রপক্ষের আপিল নিষ্পত্তি করে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেলে এ এম আমিন উদ্দিন। রিটকারীদের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মইনুল হোসেন, রোকন উদ্দিন মাহমুদ, প্রবীর নিয়োগী ও মো. খুরশীদ আলম খান।
আদেশের বিষয়টি জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশিদ আলম খান নিশ্চিত করে বলেন, সিএইচসিপিদের চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তরে হাইকোর্টের আদেশ সংশোধন করে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত। আপিল বিভাগ সিএইচসিপিদের চাকরির ক্ষেত্রে ‘কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট আইন, ২০১৮’ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে রিটকারীদের পক্ষের আরেক জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী বলেন, আদালত হাইকোর্টের আদেশ মোডিফাই করে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন। একই সঙ্গে তাদের চাকরি ‘কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট আইন, ২০১৮’ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। এ বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর আরও বিস্তারিতভাবে বলতে পারব।
আরেক জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রোকনউদ্দিন মাহমুদ বলেন, আজকের রায়ের ফলে সিএইচসিপিদের চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তর হচ্ছে না। তবে ‘কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট আইন, ২০১৮’ অনুযায়ী তাদের সুযোগ-সুবিধা প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। রাষ্ট্রপক্ষের আপিল নিষ্পত্তি করে এই আদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
রায়ের কপি হাতে পাওয়ার পর আরও বিস্তারিত বলতে পারব বলে জানান তিনি।
২০১৭ সালে কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডারদের চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তর চেয়ে সহিদুল ইসলাম, কামাল সরকার, জাহিদুল ইসলামসহ ১০ জন সিএইচসিপি হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। শুনানি শেষে একই বছরের ২২ মার্চ বিচারপতি আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাসের হাইকোর্ট বেঞ্চ আবেদনকারী ১০ জন সিএইচসিপির চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়ে রায় ঘোষণা করেন। পরে একই বছরের সেপ্টেম্বরে ১০ পৃষ্ঠার ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়।
এরপর একইভাবে ২০১৭ ও ২০১৮ সালে হাইকোর্টে ৭৬টি রিট দায়ের করেন দেশের বিভিন্ন জেলার কয়েক হাজার সিএইচসিপি। এর মধ্যে ৭৪টি রিটে সিএইচসিপিদের পক্ষে রায় হয়। পরবর্তী সময়ে রাষ্ট্রপক্ষ এসব রায়ের মধ্যে থেকে ৬২টির বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে। পরে মামলাগুলো চেম্বার আদালত হয়ে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে আসে।
পরে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের ১ নম্বর বেঞ্চে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের ওপর চূড়ান্ত শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এরপর আজ রায় প্রদানের নির্ধারিত দিনে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন নিষ্পত্তি করে এই আদেশ দেন আপিল বিভাগ।