রংপুর: রংপুরের পীরগাছায় ভাইয়ের কথামতো তালাক দেওয়ায় সাবেক স্ত্রীর ভাইকে কুপিয়ে হত্যা করে স্ত্রীকেও কুপিয়েছে মিজান নামে এক যুবক। পরে শ্বশুরবাড়িতে আগুন দিয়ে নিজেও বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি।
সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার কৈকুড়ি ইউনিয়নের মকরমপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত রোকনুজ্জামান রোকন (৪২) ওই গ্রামের তয়েজ উদ্দিনের ছেলে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, নিহত রোকনের বোন সুমি খাতুনকে সাত বছর আগে প্রেম করে বিয়ে করেন একই ইউনিয়নের সুবিদ গ্রামের দুদু মিয়ার ছেলে মিজান। তাদের একটি মেয়ে সন্তান রয়েছে। কিন্তু প্রথম থেকেই এ বিয়ে মেনে নিতে পারেনি সুমির ভাই রোকন। একপর্যায়ে তিন বছর আগে মিজানকে তালাক দিতে বোনকে বাধ্য করেন তিনি। এরপরও সুমিকে ফিরিয়ে আনতে বারবার চেষ্টা চালান মিজান। এতে বাধা দেন সুমির ভাই রোকন। এ ঘটনায় রোকনের প্রতি ক্ষোভ সৃষ্টি হয় মিজানের।
ঘটনার দিন সোমবার সন্ধ্যায় বোন সুমিকে নিয়ে রংপুর থেকে বাড়ি ফিরছিলেন রোকন। পথে ইছলার বাজার-মকরমপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঝামাঝি স্থানে পৌঁছালে তাদের পথরোধ করেন মিজান। ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাদের উপর্যুপরি আঘাত করেন। এতে ঘটনাস্থলেই গুরুতর আহত হন রোকন ও সুমি। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রোকনকে মৃত ঘোষণা করেন।
রোকন ও সুমিকে কুপিয়ে মিজান তার সাবেক শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন। এতে বাড়ির পাকা ভবন পুড়ে যায়। আগুন দেওয়ার পর নিজেও বিষপান করেন মিজান।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্বশুরবাড়ির পূর্বদিকের সড়কে অসুস্থ অবস্থায় মিজানকে উদ্ধার করে। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়।
পীরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. নাহিদুজ্জামান তালুকদার বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার আগেই রোকনের মৃত্যু হয়। আর বিষপান করায় মিজানের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
এ বিষয়ে পীরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরেস চন্দ্র বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি।