শরীয়তপুর প্রতিনিধি :
শরীয়তপুরের জাজিরা থানাধীন চর লাউখোলা এলাকার এক গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্তকে বিশটি জুতার বাড়ি দিয়েই এক গ্রাম্যসালিশে বিচার শেষ করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হওয়ার পর ইউপি সদস্য, গ্রম্য মাতুব্বর ও ধর্ষণের ভিডিও ধারণকারীকে গ্রেফতার করেছে জাজিরা থানা পুলিশ এবং ধর্ষক দুদু মিয়া খাঁকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১ টায় শরীয়তপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে প্রেস ব্রিফিংয়ে ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানান পুলিশ সুপার শরীয়তপুর জনাব এস. এম. আশরাফুজ্জামান।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন জাজিরা উপজেলার মূলনা ইউনিয়নের চরলাউখোলা বালিয়াকান্দি গ্রামের
ইউপি সদস্য জসিম উদ্দিন সরদার (৩৮), পিতা-হামিজদ্দিন সরদার, গ্রাম্য মাতুব্বর মোকসেদ মাদবর (৫০), পিতা- নজর আলী, ও ধর্ষণের ভিডিও ধারণকারী নয়ন মোড়ল (২৪), পিতা- হারুন মোড়ল, সর্ব সাং- চর লাউখোলা, থানা- জাজিরা, জেলা- শরীয়তপুর।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি বিকালে ওই গৃহবধূ জাজিরা থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি রাত ৯টার দিকে স্বামীর অনুপস্থতিতে দুদু মিয়া খাঁ ভিকটিম গৃহবধূ লাইলী বেগম (৩০)এর ঘরে ঢুকে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এসময় ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে স্থানীয় নয়ন মোড়ল।
ঘটনা ধামাচাপা দিতে ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১ খ্রিঃ (মঙ্গলবার) স্থানীয় মোকসেদ মাদবরের বাড়িতে ভুক্তভোগী পরিবারের অনুপস্থিতিতে স্থানীয় দরবার-সালিশের আয়োজন করে। দরবারের সময় উপস্থিত সালিশ-মাতুব্বরেরা তাদের সে ভিডিও মোবাইল থেকে ডিলিট করে এবং জুরিবোর্ডের মাধ্যমে ৫০টি জুতোপেটা রায় ঘোষণা করেন। ৩০টি মাপ করে দিয়ে, ২০টি জুতোপেটা করা হয় দুদু মিয়াকে। ইউপি সদস্য জসিম সরদার, মোকসেদ মাদবরসহ স্থানীয় সালিশিগণ উপস্থিত ছিলেন।
এ ঘটনায় গত ১০ ফেব্রুয়ারি তারিখ বুধবার বিকেল ৪টায় গৃহবধূ বাদী হয়ে দুদু মিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে জাজিরা থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামী জসিম সরদার, মোকসেদ মাদবর ও নয়ন মোড়লকে গ্রেফতার করে জাজিরা থানা পুলিশ।
ঘটনায় ভুক্তভোগী বাদী হয়ে মামলা করলে পুলিশ সুপার, শরীয়তপুরের নির্দেশে নড়িয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জনাব এসএম মিজানুর রহমান ও জাজিরা থানার তদন্ত ওসি মিন্টু মন্ডলসহ জাজিরা থানা পুলিশের একটি টিম মামলার তিনজন আসামীকে গ্রেফতার করে এবং ধর্ষণে অভিযুক্ত দুদু মিয়া খাঁকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।