ইউরোপের অন্যান্য দেশের মতো যুক্তরাজ্যেও প্রতিদিন হু হু করে বাড়ছে করোনার দৈনিক সংক্রমণ ও মৃত্যু; কিন্তু এর মধ্যেই দেশটির প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ঘোষণা করেছেন, সামনের সপ্তাহ থেকেই অধিকাংশ করোনা বিধিনিষেধ শিথিল করা হবে ব্রিটেনে।
এসব বিধিনিষেধ শিথিল হলে বদ্ধ জায়গায় লোকজনকে আর মাস্ক পরতে হবে না, বাড়িতে থেকে কাজ করতে হবে না এবং নৈশক্লাব, পার্ক, যাদুঘর, সিনেমাহলের মতো জনসমাগমপূর্ণ জায়গায় টিকা সনদ প্রদর্শনেরও প্রয়োজন পড়বে না।
২০২০ সালের শীতে যখন যুক্তরাজ্যের ইংল্যান্ডে করনার দৈনিক সংক্রমণ লাগামীন পর্যায় পৌঁছেছিল, সে সময় কঠোর করোনা বিধিনিষেধ জারি করেছিল দেশটির সরকার। সেই বিশেষ অবস্থাকেই সরকারি ভাবে ঘোষণা করা হয়েছিল ‘প্ল্যান বি’ হিসেবে, আর সাধারণ সতর্কতামূলক করোনা বিধিনিষেধকে অভিহিত করা হয়েছিল ‘প্ল্যান এ’ নামে।
করোনাভাইরাসের সবচেয়ে সংক্রামক ধরনের স্বীকৃতি পাওয়া ওমিক্রনের প্রভাবে ইংল্যান্ডসহ যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে সংক্রমণের ঢেউ শুরু হওয়ায় গত মাসে দেশটিতে ‘প্ল্যান বি’ কার্যকর করেছিল সরকার।
দৈনিক সংক্রমণ কমেছে- এমন কথা অবশ্য এখনও বলার উপায় নেই। মঙ্গলবারও দেশটিতে করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ৯৪ হাজার ৪৩২ জন এবং এ রোগে মারা গেছেন ৪৩৮ জন। এছাড়া ২০২০ সালে মহামারি শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১ কোটি ৫৩ লাখ ৯৯ হাজার ৩০০ জন এবং এ রোগে মৃত্যু হয়েছে মোট ১ লাখ ৫২ হাজার ৫১৩ জনের।
তবে পার্লামেন্ট বক্তব্যে বরিস জনসন বলেন, ওমিক্রনের প্রভাবে মহামারি থেকে স্থানীয় রোগে রূপান্তর ঘটছে করোনার। এ বিষয়টি বিবেচনা করেই ধীরে ধীরে স্বাভাবিক দৈনিন্দিন জীবনে প্রবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছে ব্রিটেন।
‘করোনা ধীরে ধীরে স্থানীয় রোগে পরিণত হচ্ছে। এ কারণে আমাদের করোনা বিধিনিষেধেও কিছু সংস্কার আনা জরুরি হয়ে পড়েছে। সংক্রমণের গতি রোধে সবচেয়ে কার্যকর হলো জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং আমরা সেদিকেই মনোযোগ দিচ্ছি।’
ব্রিটেনে এখনও যারা করোনা টিকার তৃতীয় বা বুস্টার ডোজ নেননি তাদের দ্রুত তা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বর্তমানে যারা হাসপাতালের আইসিইউতে আছেন, তাদের ৯০ শতাংশই বুস্টার ডোজ নেননি। আমাদের সবার মনে রাখা উচিত- মহামারি এখনও শেষ হয়নি এবং যারা টিকার ডোজ সম্পূর্ণ করেননি, তাদের জন্য ওমিক্রন কোনো মৃদু ভাইরাস নয়।’
সূত্র: এএফপি