1. hrhfbd01977993@gmail.com : admi2017 :
  2. editorr@crimenewsmedia24.com : CrimeNews Media24 : CrimeNews Media24
  3. editor@crimenewsmedia24.com : CrimeNews Media24 : CrimeNews Media24
রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৫১ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
"ফটো সাংবাদিক আবশ্যক" দেশের প্রতিটি থানা পর্যায়ে "ক্রাইম নিউজ মিডিয়া" সংবাদ সংস্থায় ১জন রিপোর্টার ও ১জন ফটো সাংবাদিক আবশ্যক। আগ্রহী প্রার্থীরা  যোগাযোগ করুন। ইমেইলঃ cnm24bd@gmail.com ০১৯১১৪০০০৯৫

কামরাঙ্গীরচরে হাজার হাজার ‘মিনি গার্মেন্টস’, নিবন্ধন নেই অনেকরই

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২.৩৭ পিএম
  • ৩৪ বার পড়া হয়েছে

আরমান বাদলঃ

রাজধানীর ঢাকার কামরাঙ্গীরচরে কয়েক দশক ধরে গড়ে উঠেছে প্রায় আড়াই হাজার তৈরি পোশাকের ছোট কারখানা। শীত মৌসুম ও ঈদের আগে এসব কারখানা থাকে জমজমাট। এসব কারখানায় কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন ৩০ হাজার শ্রমিক।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এসব কারখানার কোনোটিরই নিবন্ধনই নেই। সরকারি কোনও নীতিমালার আওতায় না থাকায় ন্যায্য-মজুরি বঞ্চিত হচ্ছেন শ্রমিকরা। মজুরি নিয়ে অভিযোগের বিষয়ে মালিকরা বলছেন, সেভাবে মুনাফা করতে না পারায় তারাও অপারগ। আর কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শক অধিদফতর সংশ্লিষ্টরা অবশ্য এগুলোকে কারখানা বলতেই নারাজ। তারা বলছেন, এগুলো মূলত দর্জি দোকান। এদের তেমন নাম-ঠিকানা নেই। তাই তাদের শৃঙ্খলার আওতায় আনা যাচ্ছে না।

কামরাঙ্গীরচর এলাকায় বেশিরভাগ অলিগলিতে গেলে চোখে পড়বে এমন অসংখ্য মিনি গার্মেন্ট বা তৈরি পোশাকের ক্ষুদ্র কারখানা। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) হিসাবে,এই সমস্ত এলাকায় কারখানার থাকার কথা না কিন্তু এখানে সংখ্যা আড়াই হাজারের মতো কারখানা আছে। গত কিছুদিন ধরেই শীত মৌসুমকে সামনে রেখে সেখানে তৈরি হচ্ছে শিশুদের বাহারি ডিজাইনের শীতকালীন পোশাক। দিনরাত চলছে কারখানার মেশিন। শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চাপের সময় অনেকেই ১৮ ঘণ্টাও কাজ করেন। তবে আশানুরূপ মজুরি পান না তারা। এমনকি সবকিছুর দাম বাড়লেও, গত ৫ বছরে বাড়েনি তাদের অনেকের মজুরি। আবার ‘অফ সিজনে’ কয়েক মাস এসব কারখানা বন্ধ থাকায় আরেক সঙ্কটে পড়তে হয় এই শ্রমিকদের। বছর শেষে অনেকের ঘাড়েই চাপে ঋণের বোঝা।

কয়েক দশক ধরে গড়ে উঠেছে প্রায় আড়াই হাজার তৈরি পোশাকের ছোট কারখান একজন শ্রমিক তার সহযোগীকে নিয়ে দৈনিক এক ডজন পোশাক সেলাই করতে পারেন। আর আকারভেদে এক ডজন এ সব পোশাকের মজুরি পায় তিনশ থেকে পাঁচশ টাকা।

আলী নগর এলাকার একজন শ্রমিক জানান, ‘আমাদের সহযোগী নিয়ে কাজ করতে হয়। তাকে বেতন দিতে হয়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৮ ঘণ্টাই কাজ করি। তার মধ্যে পাই ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। মেসে খাওয়ার বিল আছে দুজনের (সহযোগীসহ) ৩০০ টাকা। তার ওপর সংসার চালাতে হয়। এই টাকায় আমি হেলপারকে কী দেবো আর আমিই বা কী রাখবো? আমরা এখানে যতটুকু টাইমে কাজ করি, সেই সময় অন্য কোথাও কাজ করলে আরও বেশ বেতন পাবো।

মুন্সিহাটি নবীনগর এলাকার আরেকটির কারখানার শ্রমিক বলেন, ‘এখন শীতের মাল তৈরি করছি। এই সময়ে চাহিদা অনেক বেশি থাকে, এজন্য কাজের অনেক চাপ। এগুলো ৩ মাস থেকে শুরু করে ৬ বছরের বাচ্চা পর্যন্ত পড়তে পারবে। এই মাল বানাতে তুলা, সুতা, চেইন ও ইলাস্টিকসহ আরও অনেক কিছু কাঁচামাল লাগে। মালিকরা নারায়ণগঞ্জ থেকে এই মালামাল এনে দেয়।’

আবু সাইদ ভিটা বাজার এলাকার  গার্মেন্টসের শ্রমিক (কাটিং মাস্টার) জানান, এখানে আমি প্রায় ১১ বছর যাবত কাজ করি। আমি মাসে বেতন পাই সাড়ে ১১ হাজার টাকা। দেশের সব শ্রমিকদের বেতন বাড়লেও আমাদের এখানে বেতন বাড়েনি। আর আমাদের এই কাজ শুধু শীত মৌসুমে ও রমজানের ঈদের আগে। বাকি তিন-চার মাস বসে থাকতে হয়। আর তার কারণেই ৪ মাস মালিকের কাছ থেকে ধার-দেনা করে চলতে হয়। সেই কারণেই বছর শেষে মালিকের কাছে আমরা ঋণগ্রস্ত থাকি। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের ছেলে-মেয়ের ভবিষ্যৎ কী হবে। দ্রব্যমূল্য বাড়ার কারণে এই মজুরিতে চলতে অনেক কষ্ট হয়। প্রশাসনের কাছে দাবি, তারা যেন ব্যাপারটিতে নজর দেয়। আমরা পরিবার-পরিজন নিয়ে খেয়ে-পড়ে যেন থাকতে পারি। কারণ এই কাজ ছাড়া অন্য কোনও কাজ শিখিনি।

গার্মেন্টসের মহিলা শ্রমিক জানান, আমরা এখানে মাল প্যাকেট করি। আমরা প্রতিদিন ৩০ ডজন করে মাল প্যাকেট করি। তবে যখন বেশি সেল হয়, প্যাকেটিং বেশি করতে হয়। সেসময় আমাদের আয় প্রতিদিন ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা করে হয়। আর যখন কম থাকে তখন আমাদের আয়ও কমে যায়। এখানে আমি এবং আমার স্বামী দুজনই কাজ করি।

বেশিরভাগ মালিকপক্ষ এই অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে না চাইলেও কেউ কেউ জানান, বাজারে পোশাকের দাম না বাড়ায়, মজুরি বাড়ানো সম্ভব হয় না।

চাঁদ মসজিদ এলাকার একজন গার্মেন্টসের মালিক জানান, এখন আমরা শীতের পোশাক তৈরি করছি। এখন শীতের পোশাকের অনেক চাহিদা। এছাড়াও আমরা রমজানের ঈদেও পোশাক তৈরি করি। সবকিছুর সঙ্গে সঙ্গে আমাদের কাঁচামালের দামও অনেক বেড়ে গেছে। এই ঊর্ধ্বমূল্যের জন্য সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় পোশাক শিল্প। কাপড়-সুতা এগুলোর দাম অনেক বেড়েছে কিন্তু আমরা দাম বাড়িয়ে বিক্রি করতে পারি না। অনেক সময় দেখা যায়, ক্রেতারা বেশি দামের কারণে পুরনো কাপড় দিয়েও চালিয়ে নেওয়ার কথা চিন্তা করে। তারপরেও কিছু কিছু মালে আমাদের দাম বাড়িয়ে বিক্রি করতে হচ্ছে। কারণ আমাদের শ্রমিকদের বেতন দিতে হয়।

খোঁজ নিয়ে যানা যায় কামরাঙ্গীরচর এলাকায় ২ হাজার থেকে ৫ হাজার ক্ষুদ্র কারখানার নিবন্ধন নেই। আমরা প্রতিটি কারখানাকে নোটিশ প্রদান করবো। এক সপ্তাহের মধ্যে তাদের জবাব দিতে সময় বেঁধে দেবো। বেতনের বিষয়ে মালিক-শ্রমিকদের ডেকে সমাধান করার চেষ্টা করা হবে।

“বেতনের বিষয়ে কোনও শ্রমিক অভিযোগ করেনি তারপরও আমাদের কর্মকর্তা গিয়ে দেখে এসেছে। উনারা দর্জি দোকানের মতো করে নিয়েছে। সেটিকে মিনি গার্মেন্টস বললেও ভুল হবে, আসলে এরকম কোনও শব্দই নেই। কামরাঙ্গীরচর এরকম কোনও ফ্যাক্টরিও নেই। এটিকে আপনি দর্জি কারখানা বলতে পারেন। কারখানার কাজ করে মিনিমাম ৫ জন শ্রমিক থাকতে হবে, প্রতিষ্ঠানের নাম-ঠিকানা এবং মালিকেরও নাম থাকতে হবে। সেখানে কিছুই নেই। তবে এগুলোর তালিকা করা হচ্ছে। আমরা তাদের অনুরোধ করেছি, আপনার প্রতিষ্ঠানের একটি নাম দিতে হবে। যেহেতু নাম-ঠিকানা নেই, সেহেতু কোনও কিছুই করতে পারছি না। একটি লাইসেন্স করতে গেলেও নাম লাগে। এই বিষয়ে ৭-৮ জনের একটি কমিটি গঠন করা হবে। তখন আরও ভালোভাবে কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া যাবে।”

গার্মেন্টস মালিকদের একজন জানান, জোরপূর্বক আইনি ব্যবস্থা বা এরকম কোনও সিদ্ধান্ত আমরা নিতে পারি না। শ্রমিকরা যদি অভিযোগ করে তাহলে উভয়পক্ষকে ডেকে সমঝোতার করার চেষ্টা করবো।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazar_crimenew87
© All rights reserved © 2015-2021
Site Customized Crimenewsmedia24.Com