সিএনএম প্রতিবেদকঃ
ঢাকার কেরাণীগঞ্জ এলাকায় গলায় ধারালো অস্ত্র ঠেকিয়ে এক গার্মেন্টস কর্মীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এর আগে অভিযুক্তরা ওই নারীর কাছ থেকে সরকারিভাবে বিদেশ পাঠানোর কথা বলে পাসপোর্ট করার জন্য টাকা নিয়েছিল। ঘটনার আগে সেই টাকা উদ্ধার ও নিরাপত্তা চেয়ে ভুক্তভোগী ওই নারী পুলিশের কাছে অভিযোগ করলেও পাননি আইনি সহায়তা।
এ বিষয়ে থানা পুলিশের কাছে অভিযোগ করলে তাকে নিয়ে হাসি ঠাট্টা করার অভিযোগও উঠেছে স্থানীয় পুলিশের বিরুদ্ধে।
সর্বশেষ দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার ওই নারী আইনি সহায়তা পেতে বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জে গেলে কোনো প্রকার আইনগত ব্যবস্থা না নিয়ে তাকে থানা থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন এই নারী।
স্বামী পরিত্যক্তা আকলিমা (ছদ্মনাম) তার এক মেয়ে নিয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর এলাকায় বসবাস করেন।তিনি পেশায় একজন রেডিমেট গার্মেন্টস কর্মী ।
গার্মেন্টস এর কাজে সরকারিভাবে বিদেশে পাঠানোর কথা বলে এবং আর্জেন্ট পাসপোর্ট করার জন্য আকলিমা কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা নেয় তার পূর্ব পরিচিত জালাল উদ্দিন, কামাল হোসেন, মো. লালন ও মো. মিজান। তবে পাসপোর্ট না দিয়ে তারা আকলিমা সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।
পরবর্তীতে আকলিমার সঙ্গে কেরাণীগঞ্জ এলাকায় তাদের দেখা হয়। এ সময় জালালদের কাছে পাসপোর্টের টাকা ফেরত চাইলে তারা বিদেশ পাঠানোর আশ্বাস দিয়ে দিনের পর দিন সময়ক্ষেপণ করে। এক পর্যায়ে টাকা ফেরত চাইলে তাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেয় জালাল সিন্ডিকেট।
ওই নারী গত ১ জুন পুলিশ প্রধান (আইজিপি) ও ডিএমপি কমিশনারে কাছে নিরাপত্তা চেয়ে লিখিত আবেদন করেন। ঐ আবেদনের বিষয় কামালগংরা কোন ভাবে জানতে পেরে
গত ০৫/০৬/২০২৪ইং তারিখ সন্ধ্যা আনুমানিক ৬ ঘটিকার সময় উক্ত কামাল, লালন, জালাল, মিজান ও অজ্ঞাতনামা ২ জন ব্যক্তি তার সাথে দেখা করে কথা বার্তা বলে এবং তাহারা জানায় তাদের বিরুদ্ধে গত ০১/০৬/২০২৪ইং তারিখে ডিএমপি পুলিশ কমিশনার এবং মহা পুলিশ পরিদর্শক ও ০২/০৬/২০২৪ইং তারিখ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় দায়ের করা অভিযোগগুলো তুলে নেওয়ার কথাবার্তা হয় এবং তারা বলে আকলিমা (ছদ্দনাম) কে তারা আগামী ০৬/০৬/২০২৪ইং পাসপোর্ট করার জন্য পাসপোর্ট অফিসে নিয়ে যাবে এ বলে তখন ঐ নারীকে কামালদের সাথে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানাধীন চরকালীগঞ্জ এলাকার অজ্ঞাতনামা তাদের বসত বাসায় নিয়ে যায় এবং বলে আগামীকাল সকালে কেরানীগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসে তাকে নিয়ে গিয়ে পাসপোর্টের ফিঙ্গার প্রিন্ট দেওয়ানো হবে।
এমতাবস্থায় রাত আনুমানিক ৯ ঘটিকার দিকে ঐ নারীকে উক্ত বাসায় সকল দালালরা মিলে তাহার গলায় ধারালো বটি দা ধরে ভয়-ভীতি দেখায় এবং এক পর্যায় উক্ত ঘরে থাকা লিজা (২৫) নামে উক্ত দালাল মিজানের স্ত্রী পরিচয় দেওয়া লিজা ঐ নারীর মাথার সম্পূর্ণ চুল কেচি দিয়ে চুলের মুঠি ধরে গোড়া থেকে পুরো মাথার চুল কেটে দেয়।
ডাক চিৎকার করতে চাইলে তারা গলায় দা ঠেকিয়ে ধরে এবং ঐ নারীকে নানা ভয়-ভীতি দেখিয়ে লালন গংরা ঐ নারীকে হত্যার ভয় দেখায়। ঐ নারীর সাথে ক্রাইম নিউজ মিডিয়া রিপোর্টাররা কথা বলে এবং ঐ নারীর বিভিন্ন দপ্তরে দায়ের করা অভিযোগপত্র থেকে জানা যায় কামাল, লালন, জালাল, মিজান অজ্ঞাতনামা আরো একজন তাকে একের পর এক ধর্ষণ করে এভাবে ধর্ষণের পর রাত আনুমানিক ১০ ঘটিকার দিকে সবাই চলে গিয়ে উক্ত রুমে মিজান ও তার স্ত্রী পরিচয় দানকারী দুইজন মিলে ঐ নারীকে সারারাত পাহারা দিয়ে ঐ ঘরে রাখে এবং ০৬/০৬/২০২৪ইং তারিখ সকাল আনুমানিক ৭ ঘটিকার সময় বাসা থেকে বের করে চরকালীগঞ্জের খেয়াঘাটে এনে আকলিমা (ছদ্দনাম) কে একটি নৌকায় উঠিয়ে নদী পার করে শ্যামবাজার নামিয়ে দেয়। পরবর্তীতে ঐ নারী লেখাপড়া না জানায় মানুষের কাছে জিজ্ঞাসা করে করে বিভিন্ন পুলিশের কাছে যায়। পুলিশের কাছে গিয়ে তার সাথে ঘটে যাওয়া ধর্ষণের কথা বলে। তখন পথচারী এক ব্যক্তি ঐ নারীকে বলেন আপনার ঘটনা যেখানে ঘটছে সেই ঘটনাস্থলের থানা এলাকায় গিয়ে আপনার বিষয়টি বলেন। তখন ঐ পথচারী ভদ্রলোক সব কিছু শোনার পর তাকে ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় পাঠিয়ে দেন।