সিএনএম ডেস্কঃ
আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী এমপি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একজন আধুনিক বিজ্ঞান মনস্ক মানুষ।
তিনি বলেন, ‘এখন আর গ্রামে প্রাচীন পদ্ধতিতে হালচাষ হয় না। যান্ত্রিক প্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে সর্বত্র। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলা সাহিত্যের ছাত্রী, কিন্তু তিনি আধুনিক বিজ্ঞান মনস্ক মানুষ। তাঁর পেছনে এমন একজন কারিগর আছেন যিনি আমাদের পথ মসৃণ করেছেন। যিনি নামের সাথেই জয় করছেন সব।’
চতুর্থ শিল্প বিপ্লব নিয়ে আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপকমিটি আয়োজিত দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলনের সমাপনী অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বেগম মতিয়া চৌধুরী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘সজীব ওয়াজেদ জয়ের মস্তিষ্কপ্রসূত চিন্তাভাবনা থেকে যদি ডিজিটাল বাংলাদেশ না করা হতো তবে করোনায় থমকে যেতো জীবন যাত্রা। মানুষ খাবার অর্ডার করে এখন অনলাইনে। কোন বাধাই বাংলাদেশকে থামানো যায় না, যাবেও না। বাংলাদেশ যেখান থেকে উঠে এসেছে তা কেউই ভাবতে পারেনি। যে হেনরি কিসিঞ্জার বাংলাদেশকে অবজ্ঞা করেছিল, সেই কিসিঞ্জারই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পুরস্কৃত করেছেন।’
শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে আয়োজিত দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক এই সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফা জব্বার। সমাপনী অনুষ্ঠানে উপ-কমিটির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. হোসেন মনসুরের সভাপতিত্ব স্বাগত বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর। এছাড়া অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজক কমিটির আহবায়ক প্রফেসর ড. ইঞ্জিনিয়ার মুনাজ আহমেদ নূর এবং সদস্য সচিব প্রফেসর ড. ইঞ্জিনিয়ার মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে সঞ্চালনা করেন উপকমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মো. শাহাদাৎ হোসেন (শীবলু)।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফা জব্বার বলেন, আমরা চারপাশে তাকালেই দেখি সব কর্মই সূচনা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ডিজিটাল বাংলাদেশের বীজ বপন করেন বঙ্গবন্ধু। বেতবুনিয়া উপগ্রহ ভূ-কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, টিএন্ডটি বোর্ড গঠন, আইটিইউর সদস্য পদ অর্জন, বিশ্ব ডাক সংস্থা’র (ইউপিইউ) সদস্য পদ অর্জন তাঁরই অবদান।
তিনি বলেন, এখন যারা লাফালাফি করেন, সেই বিএনপি একসময় ভাবতো সাবমেরিন ক্যাবলে যুক্ত হলে দেশের তথ্য বাইরে পাচার হয়ে যাবে। আসলে বিএনপি কোন নতুন জিনিস গ্রহন করতে ভয় পায়।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শক্তি তারুণ্য। এই তরুণদের যদি সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারি তাহলে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে নেতৃত্ব দিয়ে পঞ্চম শিল্পবিপ্লবেও নেতৃত্ব দিবে বাংলাদেশ।
স্বাগত বক্তব্যে আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর বলেন, আওয়ামী লীগ শুধু মাত্র মাঠে মিছিল মিটিং নিয়ে ব্যস্ত থাকে না। আওয়ামী লীগ গবেষণা ও সৃজনশীল কাজও করে থাকে। আওয়ামী লীগ সব সময় দেশের উন্নয়নের কথা চিন্তা করে কাজ করে। যা আওয়ামী লীগ প্রমাণ করেছে।
তিনি বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব নিয়ে উপমহাদেশে প্রথম কোন রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপকমিটি প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক সম্মেলন করেছে। যা যে কোন রাজনৈতিক দলের জন্য অনুকরণীয় হয়ে থাকবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
সমাপনী দিনে সকাল ১০টা থেকে টেকনিক্যাল সেশন শুরু হয়। এদিন আইইবি’র কাউন্সিল রুমে সম্মেলনের তৃতীয় এবং সমাপনী দিনের প্রথম মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়’র (বুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার। এর পর ১০টি আলাদা ভেন্যুতে ৭০টি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করা হয়। দুপুর ২টা ২০ মিনিটে চতুর্থ এবং শেষ মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. সাইফুর রহমান। এর পর আলাদা ১০টি ভেন্যুতে ৭৩টি গবেষণা পত্র উপস্থাপন করা হয়। এর আগে শুক্রবার সকালে আইইবি’র অডিটরিয়ামে দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলনে প্রায় ২৫২টি গবেষণা পত্র উপস্থাপিত হয়। এসব গবেষণা পত্র থেকে যে সব সুপারিশগুলো এসেছে সেগুলো আওয়ামী লীগের দফতর সেল এবং সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে জমা দিবে দলের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপকমিটি।