সিএনএমঃ
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন বলছে, এটি বাস্তবায়ন করা গেলে সুষ্ঠু ভোটের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থাও ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।
২০২৩ সালের নভেম্বরে দ্বাদশ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা এবং ওই বছরের ডিসেম্বর শেষ অথবা পরের বছর জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ভোট হতে পারে বলেও জানিয়েছে ইসি।
বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) এই কর্মপরিকল্পনার মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের মিলনায়তনে মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে অসুস্থতার কারণে উপস্থিত ছিলেন না প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।
চার নির্বাচন কমিশনার- আহসান হাবিব খান, বেগম রাশেদা সুলতানা, মো. আলমগীর ও মো. আনিছুর রহমান, ইসি সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার ও অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ উপস্থিত ছিলেন।
মোড়ক উন্মোচনের পর কর্মপরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেন নির্বাচন কমিশনাররা।
এ সময় নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, আইনের আলোকে রোডম্যাপ নিধারণ করা হয়েছে। রোডম্যাপ বাস্তবায়ন করা গেলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব।
তিনি বলেন, “এক বছর চার মাসে রোডম্যাপ বাস্তবায়ন করতে পারলে কোনো রাজনৈতিক দলের অনাস্থা থাকবে না। নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠুভাবে কাজ করলে আস্থা ফিরে আসবে। রোডম্যাপে যেগুলো উল্লেখ করেছি তা বাস্তবায়ন করতে পারলে অতীতের সমস্যা থাকবে না।”
ভোটের আগে হয়রানিমূলক মামলার বিষয়ে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, “সরকারের উপর চাপ থাকবে ইসির, নির্বাচনে অনুমানের উপর ভিত্তি করে হয়রানিমূলক মামলা যাতে না হয়।
“৩৯টি দলকে আহ্বান করছি, কেউ যদি বলে নির্বাচন করছি না, তার দায়িত্ব ইসি নেবে না। তার নিরাপত্তার দায়িত্ব আমাদের না। সংবিধান মেনে চলিব- শপথ নিয়েছি, এর বাইরে যাবার সু্যোগ নেই।, যত বাধা আসুক তা অতিক্রম করব।”
ভোটের সম্ভাব্য তারিখ ডিসেম্বরের শেষ অথবা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে, তফসিল নভেম্বরে বলে জানান তিনি।
“রোডম্যাপ পাঠাব সরকারের কাছে। সরকার, পুলিশ আমাদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে, দায়িত্ব পালন করতে পারছি না মনে হলে সরে দাঁড়াব। অপেক্ষা করতে হবে এক বছর চার মাস। মূল্যায়ন করবেন, ব্যর্থ হলে সরে দাঁড়াব।”
ইভিএম নিয়ে তিনি বলেন, “সক্ষমতা থাকলে তিনশ আসনেই করতাম। তিনশ আসনে ব্যালটে করলে ঝুঁকি থাকবে।”
তিনশ আসনে ব্যালটে হলে একাধিক দিনে ভোট করার ভাবনা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান বলেন, “পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ না করতে পারলে জবাবদিহিতার প্রশ্ন আসবে, আমরা রোডম্যাপ বাস্তবায়নের চেষ্টা করব।”
হয়রানিমূলক মামলার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “মামলা নিজস্ব গতিতে চলবে, সেখানে বাধা দিতে পারব না, হস্তক্ষেপ করতে পারব না। তবে হয়রানিমূলক মামলা করতে পারবে না তফসিলের পর, সেটি বুঝিয়েছি। সবার সহযোগিতা পেলে হয়রানিমূলক মামলা হবে না।”
সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে সবার সহযোগিতা চেয়ে আরেক নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা বলেন, পরিকল্পনা নিয়ে আগাতে হয়, পরিকল্পনা নিয়ে আগাতে হয়, নয়ত সঠিকভাবে কাজ হয় না। সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক হয় এমন বিষয় নেই রোডম্যাপে।
“জনগণের প্রত্যাশা মতো নির্বাচন দেব, ব্যর্থ হলে দায় মাথায় তুলে নেব,” বলেন তিনি।
কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান বলেন, সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ সকল দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন জাতিকে উপহার দেওয়াই রোডম্যাপের উদ্দেশ্য।
“চ্যালেঞ্জ কি কি এবং তা থেকে উত্তরণ রোডম্যাপে আছে। বাস্তবায়ন আপনারা দেখবেন। ব্যতিক্রমী বলব না তবে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করবে ইসি। কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে ঘাটতি দেখলে বলবেন আমরা তা পূরণে চেষ্টা করব।”
রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থা অর্জনে ইসি অনেকটাই এগিয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।