সিএনএম প্রতিবেদকঃ
তথ্য প্রযুক্তি খাতের ভোক্তাদের স্বার্থ সুরক্ষায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ সংশোধন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে আরো জনবান্ধব ও শক্তিশালী করা, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বরাবর অনলাইনে অভিযোগ দায়ের ও নিষ্পত্তির সুযোগ সৃষ্টি এবং ১৫ দিনের মধ্যে ভোক্তাদের অভিযোগ নিষ্পত্তির জানিয়েছে টেলি কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টিক্যাব)।
১৫ মার্চ (সোমবার) সকাল ১১ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস ২০২১’ উপলক্ষ্যে আয়োজিত ‘ভোক্তা সমাবেশ’ থেকে এ ৪ দফা দাবি জানায় সংগঠনটি।
টিক্যাব’র আহ্বায়ক মোঃ মুর্শিদুল হক বলেন, “একুশ শতকের উন্মৃক্ত বাজার অর্থনীতির যুগে নিরাপদ, মানসম্পন্ন, স্বাস্থ্যসম্মত পণ্য ও সেবা পাওয়া প্রত্যেক ভোক্তার অধিকার। বাংলাদেশের মতো একটি জনবহুল ও ক্রমবিকাশমান বাজার ব্যবস্থাপনার দেশে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ ও ভোক্তা অধিকারবিরোধী কাজগুলো রোধ করা খুবই জরুরী। দেশের ভোক্তাদের অধিকার সংরক্ষণে নবম জাতীয় সংসদে, ‘ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯’ প্রণয়ন করা হয় এবং ২০১০ সালে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু দেশের ১৬ কোটি ভোক্তার অধিকার সংরক্ষণে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের জনবল খুবই নগন্য। জনবল সংকট থাকায় প্রতিনিয়ত বাজার মনিটরিং সম্ভব হচ্ছে না। এতে প্রতিনিয়ত লঙ্ঘিত হচ্ছে ভোক্তা অধিকার।”
তিনি আরও বলেন, “অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এ দেশের প্রচলিত পণ্যের গ্রাহদের বিষয়টি উল্লেখ থাকলেও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতের গ্রাহকদের অধিকার রক্ষার বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ নেই। সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিভিন্ন উদ্যোগ, ইন্টারনেট ভিত্তিক বিভিন্ন প্লাটফর্ম ব্যবহার করে নতুন নতুন ব্যবসার সুযোগ সৃষ্টি দেশে ডিজিটাল মাধ্যমে একটি বিশাল ভোক্তা গোষ্ঠীর সৃষ্টি করেছে। এ অবস্থায় ই-কমার্স সেবা, অনলাইন রাইড শেয়ারিং, অনলাইন ফুড ডেলিভারী সিস্টেম, ই-টিকেটিং, বিভিন্ন সফটওয়্যার, ওয়েবসাইট ও অ্যাপের ক্রেতা, অনলাইনে বিভিন্ন সেবার গ্রাহক, মোবাইল ব্যাংকিং খাতের গ্রাহক এবং টেলিকম সেক্টরের ভোক্তাদের অধিকার রক্ষার বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে আইনের মাধ্যমে রক্ষা করা এখন সময়ের দাবি। পুরো বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। তাই ডিজিটাল মাধ্যমের গ্রাহকদের অধিকার সুরক্ষার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতে হবে। অন্যথায় আমরা প্রযুক্তির সুফল পুরোপুরি নিতে ব্যর্থ হবো।”
টেলি কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টিক্যাব)’র আহ্বায়ক আরো বলেন, “কোন ভোক্তা যদি তার পণ্য বা সেবা নিয়ে অভিযোগ জানাতে চায় তাহলে তাকে ৩০ দিনের মধ্যে অভিযোগ সম্পর্কে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কিংবা অধিদপ্তরের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করতে হয়। এরপরে রয়েছে শুনানী ও প্রয়োজনে আদালতের দীর্ঘসূত্রতা। যা অনেকক্ষেত্রে গ্রাহকদের ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের সুযোগ নিতে নিরুৎসাহিত করে। এ আইনকে আরো জনপ্রিয় ও সহজলভ্য করতে গ্রাহক অভিযোগ ও তা নিষ্পত্তির বিষয়টি অনলাইন মাধ্যমে করা যেতে পারে। পাশাপাশি দ্রুততার সাথে ১৫ দিনের মধ্যে অভিযোগ নিষ্পত্তি করলে সারাদেশের গ্রাহকরা অভিযোগ জানাতে উৎসাহিত হবে এবং অসাধু ব্যবসায়ীদেরও অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।”
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, ভাড়াটিয়া পরিষদের সভাপতি মোঃ বাহারানে সুলতান বাহার, বাংলাদেশ ভূমিহীন আন্দোলনের প্রধান উপদেষ্টা মোঃ ইকবাল আমীন, সবুজ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান বাপ্পি সরদার, জাতীয় মানবাধিকার সমিতির চেয়ারম্যান মোঃ মঞ্জুর হোসেন ঈসা, বাংলাদেশ রেলওয়ে পোষ্য সোসাইটির সভাপতি মনিরুজ্জামান মনির, বাংলাদেশ যুব শক্তির আহ্বায়ক হানিফ বাংলাদেশী, বাংলাদেশ লেবার পার্টির মহাসচিব আব্দুল্লাহ আল মামুন, জাগো বাংলাদেশ শিশু কিশোর ফেডারেশনের সভাপতি মোঃ জামাল শিকদার, নিরাপদ বাংলাদেশ চাই’র চেয়ারম্যান সাংবাদিক খন্দকার মাসুদ উজ জামান, টিক্যাবের যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ ওবায়েদ উল্লাহ, মোস্তফা আল ইহযায, শামীম আহমেদ ইরফান, মোঃ ইউসুফ আলী সরকার, আশরাফুল ইসলাম আসিফ, মোঃ শাহিন আলম প্রমুখ।