সিএনএম প্রতিনিধিঃ
জামালপুরের মেলান্দহে ১১ বছরের শিশুকে ধর্ষণের দায়ে মিছবাহুল জান্নাত মহিলা মাদ্রাসার সুপার মোখলেসুর রহমানকে (৪৫) কে ৮মার্চ কারাগারে প্রেরণ করেছে। অভিযুক্ত মুখলেছুর রহমান মাহমুদপুর ইউনিয়নের ঠেংগেপাড়া গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে।
জানা গেছে, পৌরসভার নাগেরপাড়ায় অভিযুক্ত মোখলেসুর রহমানের বাসায় ২০১৭ সালে মহিলা আবাসিক মাদ্রাসা চালু করে। গত ৪মার্চ দিবাগত মধ্যরাতে মাদ্রাসার সুপার মোখলেসুর রহমান আবাসিক কক্ষ থেকে ৬ষ্ঠ শ্রেণি পড়ুয়া ১১ বছরের শিশুকে টেনে হেচড়ে তার বিছানায় নিয়ে ধর্ষণ শেষে ধর্ষিতাকে ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখে। মাদ্রাসাটি নির্জন স্থানে থাকায় অন্যান্য ছাত্রীদের ডাক চিৎকারে কেও এগিয়ে আসার সুযোগ পায়নি। পরদিন ১২টার দিকে অন্যান্য ছাত্রীদের সহায়তায় ধর্ষিতাসহ অন্যান্য শিশুরা পালিয়ে গেলে ঘটনাটি জানি জানি হয়। এ ঘটনার পর থেকেই লম্পট মোখলেসুর রহমান গা-ঢাকা দেয়। ৭মার্চ বিকেল ৫টার দিকে মেলান্দহ বাজারের কাজিরপাড়ায় তাকে জনতা ঘেরাও করে গণধোলাই দেয়।
খবর পেয়ে মোখলেসুর রহামনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসে। রাতেই ধর্ষিতার বাবা লাল চাঁন বাদি হয়ে মামলা (নং-৫) দায়ের করেন।
অফিসার ইনচার্জ মায়নুল ইসলাম জানান-ভিকটিমকে ডাক্তারি পরিক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। আসামী মোখলেসুর রহমানকে কোর্টে চালান দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় ৮মার্চ দুপুরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন মিয়া ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কওমি মাদ্রাসা বোর্ডের গ্রহণযোগ্য একজন আলেম মাওলানা আমানুল্লাহ কাশেমীর নাম ভাঙ্গিয়ে পরিক্ষার প্রোগ্রাম ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। যাতে সাধারণ মানুষের মধ্যে কোন সংশয় না থাকে।
মাওলানা আমানুল্লাহ কাশেমী বলেন-ওখানে মাদ্রাসা আছে এটাই জানি না। মোখলেসুর রহমান নামে কোন লোককেও আমি চিনি না।
কওমি মাদ্রাসা পরিচালনা বোর্ডের আঞ্চলিক পরিচালক (জামালপুর) মাওলানা আব্দুল্লাহ প্রেরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মিছবাহুল জান্নাত নামে কোন মাদ্রাসা তাদের বোর্ডের তালিকায় নেই। এর দায় অন্য কেও নিবে না। এই ঘটনার সাথে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়া উচিত।
এলাকার একাধিক নারী-পুরুষ জানিয়েছেন-কয়েকদিন আগেও এই মাদ্রাসার শিক্ষিকাকেও ধর্ষণের ঘটনায় সালিশ করেছি। বিষয়টি থানা পর্যন্ত গড়িয়েছিল। তারা আরো জানান-বসবাস অযোগ্য এমন একটি নির্জন স্থানে ঝুপড়ি ঘরে মাদ্রাসার নাম ভাঙ্গিয়ে এখানে ধর্ষণের আস্তানা তৈরি করা হয়েছে। তারা প্রতারক মোখলেসের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করেন।
এলাকাবাসি ও আলেম সমাজের সাথে কথা বলে জানা গেছে, একই অভিযোগে প্রতারক মোখলেসকে কিছুদিন আগেও জুতার মালা পরানো হয়েছিল। নারী-কেলেংকারির ঘটনায় তার স্ত্রী দু’ সন্তান নিয়ে পিত্রালয়ে চলে গেছে।