ইউক্রেনে চলমান সামরিক অভিযানের তৃতীয় মাসে এসে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় খেরসন অঞ্চল পুরোপুরি দখলে নিয়েছে রুশ সেনারা। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তাদের বাহিনী দক্ষিণ ইউক্রেনের সমগ্র খেরসন অঞ্চলটিকে ‘মুক্ত’ করেছে।
রুশ বার্তাসংস্থা ইন্টারফ্যাক্সের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। যদিও মার্চের শুরুতে খেরসন শহরটি দখলে নিয়েছিল রুশ সেনারা।
অন্যদিকে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এই দাবি অবশ্য স্বাধীনভাবে নিশ্চিত করতে পারেনি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। তবে সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার ইউক্রেনের একজন আঞ্চলিক সামরিক কর্মকর্তা বলেছেন, (খেরসনের) আঞ্চলিক প্রশাসনের এবং একইসঙ্গে সিটি কাউন্সিলের নতুন প্রধান নিয়োগ করেছে রাশিয়ার সেনাবাহিনী।
২০২১ সালের ২৭ অক্টোবর হেন্নাদি লাহুতাকে খেরসনের গভর্নর নিযুক্ত করেছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। টেলিগ্রামে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেছেন, ‘গতকাল দখলকারীরা খেরসন সিটি কাউন্সিলের পুরো প্রাঙ্গণ দখল করে নিয়েছে। পরে সেখান থেকে তারা ইউক্রেনের সকল প্রতীক ও চিহ্ন সরিয়ে দেয় এবং নিজস্ব রক্ষীদের নিযুক্ত করেছে।’
এদিকে খেরসন শহরের মেয়র ইহোল কোলিকায়েভ বলেছেন, তিনি রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর নিযুক্ত নতুন প্রশাসনকে সহযোগিতা করতে অস্বীকার করেছেন। ফেসবুকে দেওয়া এক বার্তায় তিনি বলেন, ‘আমি খেরসনেই অবস্থান করছি এবং ১৮ মাসেরও বেশি সময় আগে আমাকে শহর পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া খেরসনের বাসিন্দাদের সাথেই আছি।’
এর আগে মার্চের প্রথম সপ্তাহে ইউক্রেনের অন্যতম প্রধান শহর এবং বন্দরনগরী খেরসন দখল করে নেয় রাশিয়া। এছাড়া প্রথম বড় কোনো ইউক্রেনীয় শহর হিসেবে খেরসন দখল করেছিল রুশ সেনারা। এর প্রায় দুই মাসের মাথায় এবার খেরসনের পুরো অঞ্চলটি দখলে নিলো রাশিয়া।
প্রায় ৩ লাখ বাসিন্দার খেরসন শহর ও অঞ্চলটি রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর দখলে যাওয়া মস্কোর জন্য বড় ধরনের এক বিজয়। মূলত রুশ সামরিক বাহিনীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘাঁটিও হবে শহরটি।
এছাড়া এই শহর থেকে উপকূল বরাবর আরও ভেতরে এবং পশ্চিমের আরেক বৃহৎ বন্দরনগরী ওডেসার সাথে যোগাযোগ স্থাপিত হবে। খেরসন শহরটি কৃষ্ণ সাগরের গুরুত্বপূর্ণ বন্দর এবং একটি শিল্পকেন্দ্র।