নিয়মবহির্ভূতভাবে খেয়াঘাট ইজারার বিজ্ঞপ্তি দেওয়ায় বাগেরহাট পৌরসভার মেয়র খান হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে জেলা পরিষদ। জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ঝুমুর বালার অভিযোগ আমলে নিয়ে গতকাল রোববার (১৭ এপ্রিল) বাগেরহাট সহকারী জজ (সদর) আদালতের বিচারক ড. আতিকুল সামাদ মেয়রকে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বাগেরহাট সদর উপজেলার মুনিগঞ্জ খেয়াঘাট, দড়াটানা খেয়াঘাট, সুপারি পট্টি খেয়াঘাট, ভদ্রপাড়া খেয়াঘাট ও দড়াটানা সেতুর নিচের ঘাট বাগেরহাট জেলা পরিষদের তালিকাভুক্ত সম্পত্তি। কিন্তু নিয়ম না মেনেই বাগেরহাট পৌরসভা এসব ঘাটের ইজারা দিয়ে আসছিল। ২০১০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি এক পত্রের মাধ্যমে বাগেরহাট পৌরসভাকে ইজারা কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার জন্য চিঠি দেয় জেলা পরিষদ। কিন্তু এরপরও বেআইনিভাবে ইজারা কার্যক্রম ও ঘাটের টোল আদায় করতে থাকে পৌরসভা। পরবর্তীতে জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি ঘাটগুলো ইজারা দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হয় এবং সর্বোচ্চ দরদাতাদের অনুকূলে ঘাটগুলো ইজারা দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী ৩০ মার্চ ইজারা গ্রহীতাদের অনুকূলে ঘাটের দখল বুঝিয়ে দেয় জেলা পরিষদ।
কিন্তু বাগেরহাট পৌরসভার মেয়র খান হাবিবুর রহমান ৫ এপ্রিল আকস্মিকভাবে ঘাটগুলো আবার ইজারা দেওয়ার জন্য দৈনিক পূর্বাঞ্চল পত্রিকায় দরপত্র বিজ্ঞপ্তি দেয়। যা আইনের পরিপন্থী। এর ফলে সরকার তথা জেলা পরিষদ রাজস্ব হারাবে। বিবাদী অত্যন্ত ক্ষমতাশীল হওয়ায় বাদী আইনের আশ্রয় গ্রহণ করেছেন। মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পৌরসভার বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞার আবেদন করা হয় মামলায়।
জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ঝুমুর বালা বলেন, জেলা পরিষদের মালিকানাধীন ঘাটগুলো ইজারা দেওয়ার পর বেআইনিভাবে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ দরপত্র আহ্বান করার কারণে আমরা আদালতের শরণাপন্ন হয়েছি। যাতে ঘাট নিয়ে ইজারাদারদের মধ্যে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে।
জেলা পরিষদের আইনজীবী ফকির নওরেশুজ্জামান লালন বলেন, আদালত আমাদের আবেদনটি আমলে নিয়েছেন। ঘাটগুলো ইজারা দেওয়া কেন অবৈধ হবে না আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে পৌরসভাকে তা জানানোর আদেশ দিয়েছেন। পৌরসভা আদালতের এই শোকজের জবাব দিলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
এর আগে ২০২১ সালের ২৫ নভেম্বর নিয়োগ বাণিজ্য ও প্রকল্প বাস্তবায়ন না করে বরাদ্দকৃত সরকারি প্রায় আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বাগেরহাট পৌরসভার মেয়র খান হাবিবুর রহমানের নামে দুটি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সেই মামলায় প্রায় দেড় মাস কারাভোগের পর বর্তমানে জামিনে রয়েছেন পৌর মেয়র।