পরকীয়া প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করতে যাবেন মা। কিন্তু শিশুসন্তান জেগে থাকায় বাধে বিপত্তি। অবশেষে সন্তানকে গলাকেটে হত্যার চেষ্টা করেন। এ ঘটনায় শিশুটির কণ্ঠনালীতে ১৬টি সেলাই লেগেছে। পুরোপুরি শঙ্কামুক্ত না হলেও চিকিৎসাধীন আছে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
শুক্রবার (২৫ মার্চ) দুপুর দেড়টার দিকে বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার দড়িরচর খাজুরিয়া ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে।
শিশু সার্জারি ওয়ার্ডের কর্তব্যরত ডা. তানিম বলেন, শিশুটি এখনো শঙ্কামুক্ত নয়। গলায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত থাকায় অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে শিশুটির চিকিৎসা করা হচ্ছে।
মেহেন্দীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানান, সন্তানকে হত্যাচেষ্টার ঘটনার খবর জানতে পেরে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তবে থানায় কেউ এখনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হত্যাচেষ্টার শিকার ওই শিশুর নাম নুসরাত (৮)। সে দড়ির চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী এবং ইউসুফ কাজী ও সীমা আক্তারের প্রথম সন্তান।
আহত শিশুর ফুফু কল্পনা বেগম বলেন, নুসরাতের বাবা ইউসুফ কাজী ঢাকায় প্যাকেজিংয়ের কাজ করে। বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে ইউসুফের ফুফাতো ভাই আব্দুস সালামের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন নুসরাতের মা সীমা আক্তার।
তিনি বলেন, গত বছর সালামের সঙ্গে পালিয়েছিল সীমা। পরে স্থানীয়ভাবে সালিস বৈঠকের মাধ্যমে তাকে ফিরিয়ে আনা হয়। সম্ভবত আজ আবার পালাতে চেয়েছিল। দুপুর ১২টার দিকে নুসরাতকে ঘুমাতে বলে সীমা। কিন্তু নুসরাত না ঘুমানোয় ঝামেলা হয়। পরে নুসরাতকে ঘরের পাশের বারান্দায় ডেকে নিয়ে চাপাতি দিয়ে জবাই করার চেষ্টা করে। নুসরাত চিৎকার দিলে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়। এরপর সন্ধ্যা ৬টায় শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
কল্পনা আক্তার দাবি করেন, নুসরাতের মা সীমা বেগম বরিশাল মেডিকেলেও এসেছিলেন। কিন্তু মেয়েকে এখানে রেখে কৌশলে সে পালিয়ে গেছে। আমরা এই ঘটনার সঠিক বিচার চাই।