রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতে ভারতের ভূমিকা নিয়ে মুখ খুলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেছেন, ওয়াশিংটনের বন্ধু ও সহযোগী দেশগুলোর মধ্যে ভারত হলো ব্যতিক্রম। তার ভাষায়, ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন নিয়ে ভারতের অবস্থান ‘শেকি’ বা নড়বড়ে, কম্পমান।
একইসঙ্গে সামরিক জোট ন্যাটো, ইউরোপ ও এশিয়ার সহযোগী দেশগুলোর প্রশংসা করে স্থানীয় সময় সোমবার (২১ মার্চ) বাইডেন বলেছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরোধিতায় এসব দেশ পুরোপুরি ঐক্যবদ্ধ। তারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে আর্থিক নিষেধাজ্ঞায় অংশ নিয়েছে। কিন্তু ভারত সেই পথে যায়নি।
কোয়াড গোষ্ঠীতে চারটি দেশ আছে। যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও ভারত। এর মধ্যে ভারত একমাত্র দেশ, যারা রাশিয়া থেকে ডিসকাউন্টে তেল কিনছে বলে অভিযোগ রয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটি রাশিয়ার বিরুদ্ধে জাতিসংঘে একবারও ভোট দেয়নি।
অন্যদিকে, ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে ভারতীয় বিচারপতি রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার পর ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়ে দিয়েছে, সেটা তার (ভারতীয় বিচারপতি) ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। এর সঙ্গে ভারত সরকার কোনোভাবে জড়িত নয়।
এই পরিস্থিতিতে মার্কিন বিজনেস লিডারদের বৈঠকে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ‘কোয়াডে জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার প্রতিক্রিয়া খুবই কঠোর। তারা প্রেসিডেন্ট পুতিনের আগ্রাসনের তীব্র বিরোধিতা করেছে। শুধু ভারত ব্যতিক্রম এবং তারা শেকি।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেছেন, ‘পুতিন ভেবেছিলেন, তিনি ন্যাটোকে ভেঙে দিতে পারবেন। কিন্তু সেটা হয়নি। ন্যাটোকে অতীতে কখনও এতটা ঐক্যবদ্ধ, এতটা শক্তিশালী দেখা যায়নি।’
কিছুদিন আগেই ভারতের এক কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন, ভারত বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে নিজের প্রয়োজনের ৮৫ শতাংশ অপরিশোধিত তেল আমদানি করে। এর মধ্যে রাশিয়া থেকে আসে মাত্র এক শতাংশ। এখন বিশ্বে অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় ভারতের চ্যালেঞ্জও বেড়ে গেছে। ফলে ভারত বিকল্পের খোঁজ করছে।
এছাড়া ভারত জাতিসংঘে তিনবার রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোটদানে বিরত থেকেছে। নয়াদিল্লির দাবি, তারা নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়েছে। তারা রাশিয়া এবং ইউক্রেন দুই পক্ষকেই লড়াই থামিয়ে আলোচনায় বসে বিরোধ মেটানোর জন্য অনুরোধ করেছে।
সূত্র : ডয়চে ভেলে