নরসিংদীতে মানব পাচারের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে আরও ১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা ডিবি পুলিশ। মানব পাচারের অভিযোগে এ নিয়ে মোট তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রোববার (২০ মার্চ) সকালে ঢাকা পোস্টকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাহেব আলী পাঠান।
গ্রেপ্তার ওই ব্যক্তির নাম তারেক পাঠান (৩২)। তিনি রায়পুরার আমীরগঞ্জ ইউনিয়নের হাসনাবাদ গ্রামের বাচ্চু মোল্লার ছেলে।
এর আগে গত ৮ মার্চ একই অভিযোগের ভিত্তিতে আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন একই এলাকার মামুন মোল্লা (৩৯) ও সুবল চন্দ্র শীল (৪৫)।
সম্প্রতি লিবিয়া থেকে সাগরপথে ট্রলারে করে ইতালি যাওয়ার পথে নরসিংদীর এক যুবক বেঁচে ফিরে রোমহর্ষ বর্ণনা দেন। তার বর্ণনা অনুসারে, ট্রলারের ৩৫ যাত্রীর মধ্যে ৬ জন বেঁচে ফিরেছেন। তাদের মধ্যে ২ জন বাংলাদেশে ফিরেছেন ইতোমধ্যে। বাকি ২৮ জন সাগরে নিখোঁজ হয়েছেন। তাদের মধ্যে নরসিংদীর অন্তত ১৫ জন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জানা যায়, রায়পুরার আমীরগঞ্জ ইউনিয়নের মনির চন্দ্র শীল নামে এক ব্যক্তি পাঁচ বছর ধরে লিবিয়ায় চাকরি করেন। সেখানে তিনি হাসনাবাদ গ্রামের তারেক মোল্লা, মামুন মোল্লা অন্যদের সহায়তায় ইতালি নেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে মৌখিক চুক্তিতে অর্থ সংগ্রহ করেন। এরই সূত্র ধরে রায়পুরার ডৌকারচর এলাকার আশিষ সূত্রধর, আলামিন ফরাজী এবং নাদিম সরকারের পরিবারের কাছ থেকে বৈধ পথে ইতালি নেওয়ার কথা বলে আট লাখ টাকায় চুক্তি করে। বিভিন্ন মেয়াদে মামুন মোল্লা ও তারেক মোল্লা তাদের কাছ থেকে অর্থ নেন।
পরে তাদের ইতালি না পাঠিয়ে লিবিয়ায় পাঠান। গত ২৭ জানুয়ারি ইতালিগামীদের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হয় পরিবারগুলোর। এরপর আর কোনো খোঁজ পাননি তাদের। আশিষ সূত্রধর, নাদিম ও আলামিন ফরাজীর মতো এমন আরও ভুক্তভোগীকে একইভাবে ইতালির কথা বলে লিবিয়া বা অন্য কোনো দেশে তারা পাচার করেছেন বলে জানা গেছে।
রায়পুরা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আতাউর রহমান জানান, নিখোঁজ আশিষের বাবা অনিল চন্দ্রের করা মামলায় গত ৮ মার্চ দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান জানান, বাগেরহাট এলাকা থেকে অভিযুক্ত তারেক মোল্লাকে গ্রেফতার করেছি আমরা। কখন, কীভাবে, কী উপায়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সেটা তদন্তের স্বার্থে এখনই জানাচ্ছি না।