২০১৫ সালে চট্টগ্রাম বন্দরে কোকেন জব্দের ঘটনায় চোরাচালান আইনে দায়ের করা মামলায় ১০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়েছে। আগামী ৩ মার্চ সাক্ষ্যগ্রহণের সময় নির্ধারণ করেছেন আদালত।
সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চতুর্থ অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শরীফুল আলম ভূঁইয়ার আদালত বিচার শুরু করে সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করেছেন।
ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী।
তিনি বলেন, কোকেন জব্দের ঘটনায় চোরাচালান আইনে দায়ের করা মামলায় ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়েছে। আসামি পক্ষের আইনজীবী আদালতে হাজির পাঁচ আসামিকে মামলা থেকে অব্যাহতির আবেদন করেছিলেন। আদালত আসামিদের অব্যাহতির আবেদন না মঞ্জুর করেন। আজ আদালতে পাঁচজন আসামি উপস্থিত ছিলেন, বাকি পাঁচজন পলাতক রয়েছেন। আসামিদের বিরুদ্ধে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫বি/২৫ ডি ধারায় অভিযোগ গঠন করা হয়।
তিনি আরও বলেন, একই ঘটনায় মাদক আইনে দায়ের হওয়া মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. ফরিদ আলম। তিনি মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট থাকার সময়ে মামলার আসামি মোস্তফা সোহেল, মোস্তফা কামাল ও মো. মেহেদী আলমের ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণ করেন। তিনি সেই বিষয়ে সাক্ষ্য প্রদান করেন।
পিপি বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী বলেন, মাদক মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সর্বমোট ২২ জন সাক্ষী সাক্ষ্য প্রদান করেছেন। মামলার পরবর্তী সাক্ষ্য প্রদানের জন্য ৩ মার্চ সময় নির্ধারণ করেছেন আদালত।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটরকে সহযোগিতা করেন অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট নোমান চৌধুরী, অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট আবু জাফর, অ্যাডভোকেট সাব্বির আহমেদ শাকিল, অ্যাডভোকেট মো. সাহাব উদ্দিন।
এ মামলার আসামিরা হলেন- চট্টগ্রামের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খান জাহান আলী লিমিটেডের চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ, তার ভাই মোস্তাক আহম্মদ, খান জাহান আলী লিমিটেডের কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা সোহেল, মোস্তফা কামাল, আইটি বিশেষজ্ঞ মেহেদী আলম, আতিকুর রহমান, কসকো বাংলাদেশ শিপিং লাইনস লিমিটেডের ব্যবস্থাপক (করপোরেট, বিক্রয় ও বিপণন) এ কে এম আজাদ, যুক্তরাজ্য প্রবাসী ফজলুর রহমান ও বকুল মিয়া এবং সিঅ্যান্ডএফ কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ৭ জুন চট্টগ্রাম বন্দরে একটি কনটেইনার জব্দের পর সিলগালা করে কর্তৃপক্ষ। পরে আদালতের নির্দেশে কন্টেইনার খুলে ১০৭টি ড্রাম থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। প্রথমে বন্দরের পরীক্ষায় এসব নমুনায় কোকেনের উপস্থিতি না মেলায় ঢাকার বিসিএসআইআর এবং বাংলাদেশ ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরিতে তরলের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। দুই পরীক্ষাগারেই নমুনায় তরল কোকেনের অস্তিত্ব ধরা পড়ে। এ ঘটনায় একই বছরের ২৮ জুন চট্টগ্রামের বন্দর থানায় মাদক নিয়ন্ত্রণ ও চোরাচালান আইনে দুইটি মামলা করে পুলিশ।