সিএনএমঃ
ঢাকা রাজধানীর ডেমরায় ভুয়া চিকিৎসক জয়নুল আবেদীন জয় ওরফে মো. আরিফ হাসানকে (৩৫) গ্রেপ্তার করে মঙ্গলবার বিকেলে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (১১ নভেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় ডেমরার বাদশা মিয়া রোডের নিউ টাউন আবাসিক এলাকার ফেইথ পয়েন্ট হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালিয়ে তাকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করে ডেমরা থানা পুলিশ।
জয়নুল আবেদীন জয় মাদারীপুরের শিবচর থানার সুতারপাড়া গ্রামের মৃত মজিদ বেপারীর ছেলে। এসএসসি পাস না করেও তিনি নিজেকে এমবিবিএস (ঢাকা), এমএস (অর্থোপেডিক সার্জারি) এবং বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হাড় জোড়া, পঙ্গু ও বাত রোগ বিশেষজ্ঞ ও সার্জন হিসেবে পরিচয় দিতেন। তিনি সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এনেস্থেসিয়া বিশেষজ্ঞ ডা. মো. আরিফ হোসেনের নাম, সনদ এবং বিএমডিসি রেজিস্ট্রেশন নম্বর (এ—৮১৯৮৩) জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যবহার করতেন। এ ঘটনার খবর পেয়ে প্রকৃত ডা. মো. আরিফ হোসেন সোমবার রাতে ডেমরা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার পরপরই পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। মঙ্গলবার দুপুরে তাকে আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
সূত্রে জানা যায়, ডা. আরিফ হাসান (৩২) গত ২৬ অক্টোবর ফেসবুকে জানতে পারেন যে, তার নাম ও বিএমডিসি রেজিষ্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার করে জয়নুল আবেদীন জয় ওরফে মো.আরিফ হাসান নামের এক ব্যক্তি ফেইথ পয়েন্ট হাসপাতালে ডাক্তার হিসেবে কাজ করছে। বিষয়টি নিশ্চিত হতে সোমবার (১১ নভেম্বর) রাত ৮.১৫ নাগাদ হাসপাতালে গিয়ে স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে জানতে পারেন যে, সে ৪ বছর যাবৎ হাসপাতালের মালিকদের যোগসাজশে ভুয়া ডাক্তার হিসেবে কাজ করছে। ডা. আরিফ হাসান হাসপাতাল থেকে একটি প্রেসক্রিপশন সংগ্রহ করেন যেখানে তার নাম ও বিভিন্ন ডিগ্রি লেখা ছিল।
অভিযুক্ত জয়নুল আবেদীন সম্পর্কে ডেমরার ফেইথ পয়েন্ট হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ম্যানেজার মো.মেহেদী দৈনিক জনকন্ঠকে বলেন, আমরা ২০২৪ সালের মে মাসে ফেইথ পয়েন্ট হাসপাতালটি কিনে নিয়েছি। প্রতিষ্ঠানটি ২০২১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। জয়নুল আবেদীন তখন থেকেই এখানে চিকিৎসা দিয়ে আসছিলেন। আমরা তাকে একজন আসল চিকিৎসক হিসেবেই জানতাম। এছাড়া, ফেইথ পয়েন্ট প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগে থেকেই তিনি স্থানীয় সেইফ ফামার্তে ডাক্তার হিসেবে চিকিৎসা দিতেন। এ বিষয়ে সেইফ ফার্মার মালিক বলেন, জয়নুল আবেদীন তাদের এখানে নিয়মিত চিকিৎসা দিতেন না, তবে প্রয়োজনে ডাকা হলে তিনি আসতেন। তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আগে কখনো শোনা যায়নি।
এ বিষয়ে ডেমরা থানার ওসি মো. ইলিয়াস হোসেন বলেন, সে অন্য ডাক্তারের সনদ নকল করে সাধারন মানুষের সাথে প্রতারণা করে চলছে দীর্ঘদিন ধরে। এ বিষয়ে আসল ডাক্তার গতকাল রাতে মামলা করলে ওই সময়েই প্রতারক ডাক্তার কে গ্রেফতার করে মঙ্গলবার সকালে আদালতে প্রেরণ করা হয়।