অর্ধকোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে পুলিশের গোয়েন্দা শাখার সাবেক ওসি মো. আবুল হাসেম খানের বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার (১৮ এপ্রিল) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে কমিশন থেকে ওই মামলার অনুমোদন দেওয়া হয়। দুদকের একটি সূত্র ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। শিগগিরই যশোরের জেলা কার্যালয় থেকে মামলাটি দায়ের করা হবে বলে জানা গেছে। আবুল হাসেম খান ঝিনাইদহ থেকে অবসরে যান।
অনুসন্ধান প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, মো. আবুল হাসেম খান তার নিজ নামে এক লাখ ৩৩ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদ ও ৪০ লাখ ৮৮ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদসহ মোট ৪২ লাখ ২১ হাজার টাকার সম্পদ থাকার ঘোষণা দেন। দুদকের অনুসন্ধানে তার ৩৪ লাখ ২৬ হাজার ৫৯৯ টাকার স্থাবর সম্পদ ও ৪০ লাখ ৮৮ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদসহ মোট ৭৫ লাখ ১৪ হাজার ৫৯৯ টাকার সম্পদ থাকার তথ্য পাওয়া যায়। অর্থাৎ ৩২ লাখ ৯৩ হাজার ৫৯৯ টাকার সম্পদের তথ্য তিনি গোপন করেছেন ।
অন্যদিকে দুদকের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, মো. আবুল হাসেম খানকে বার বার বলার পরও তিনি আয়-ব্যয়ের প্রকৃত হিসাব দেননি। তবে তিনি অবসর গ্রহণের পর ৪০ লাখ টাকা গ্রাচুইটি পেয়েছেন বলে সম্পদ বিবরণী ফরমে উল্লেখ করেছেন।
সম্পদ বিবরণীতে হাসেম বলেছেন, তিনি কর সার্কেল -৭৬ , কর অঞ্চল -০৪ , ঢাকায় ২০০৯-১০ করবর্ষে আয়কর নথি খুলেছেন। সেখানে তিনি প্রারম্ভিক সম্পদ দুই লাখ ৮৭ হাজার ১২১ টাকা দেখিয়েছেন। ২০১০-১১ থেকে ২০১৯-২০ করবর্ষ পর্যন্ত তিনি মোট ৩৩ লাখ ৮০ হাজার ৬৪২ টাকা আয় এবং একই সময়ে ১৯ লাখ ৬ হাজার টাকা ব্যয় প্রদর্শন করেছেন। সে অনুসারে নিট আয় দাঁড়ায় ১৪ লাখ ৭৪ হাজার ৬৪২ টাকা ।
সব মিলিয়ে তার মোট আয় দাঁড়ায় ৫৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৬৩ টাকা। এর বিপরীতে দুদক ৭৫ লাখ ১৪ হাজার ৫৯৯ টাকার সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পায়। অর্থাৎ ১৭ লাখ ৫২ হাজার ৮৩৬ টাকার সম্পদ জ্ঞাত আয় বহির্ভূত বলে দুদকের অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে।
দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে সম্পদ গোপন করাসহ জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ সম্পদ দখলে রাখার অপরাধে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬ ( ২ ) ও ২৭ (১) ধারা , মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪ (২) ও ৪ (৩) ধারায় মামলা দায়েরের অনুমোদন দিয়েছে কমিশন।