ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ পরিচালনা করছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সামরিক অভিযানের তিন সপ্তাহের মাথায় এসে অনেকটা ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে পূর্ব ইউরোপের ছবির মতো সুন্দর এই দেশটি। এমনকি অভিযোগ উঠেছে বেসামরিক প্রাণহানিরও।
এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের নিন্দা জানিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে যুদ্ধাপরাধী আখ্যা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) হওয়া ভোটাভুটিতে সর্বসম্মতিক্রমে মার্কিন সিনেট পুতিনকে নিন্দা জানিয়ে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করে। বুধবার (১৬ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিরল এই ক্রস-পার্টি ভোটের মাধ্যমে পুতিনকে যুদ্ধপরাধী আখ্যা দেওয়ার পাশাপাশি ইউক্রেন আক্রমণের বিষয়ে রুশ প্রেসিডেন্টর সিদ্ধান্তের তদন্ত করতে হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রতি আহ্বানও জানানো হয়েছে।
এদিকে ভোটাভুটির আগে মার্কিন সিনেটের ডেমোক্র্যাটিক নেতা চাক শুমার মঙ্গলবার সেখানে বক্তৃতা করেন। বক্তব্যে তিনি বলেন, ইউক্রেনে ‘নৃশংসতার’ জন্য প্রেসিডেন্ট পুতিনকে জবাবদিহি করতে হবে।
এদিকে রিপাবলিকান সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমাদেরকে এখন ব্রিটেনসহ অন্য মিত্রদেশগুলোকে সঙ্গে নিয়ে একটি ইন্টেল সেল গঠন করতে হবে। এর মাধ্যমে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী যে যুদ্ধাপরাধে জড়িত সেটি মানুষের পৌঁছে দিতে হবে এবং (যুদ্ধপরাধে জড়িত) রুশ কমান্ডারদের নাম প্রকাশ্যে আনতে হবে।’
তার ভাষায়, ‘(রাশিয়ার জন্য) নেম-অ্যান্ড-শেম ক্যাম্পেইন শুরু করা হচ্ছে।’
উল্লেখ্য, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোরে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়ান সৈন্যরা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে ইউক্রেনে এই হামলা শুরু করে। একসঙ্গে তিন দিক দিয়ে হওয়া এই হামলায় ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পড়েছে বৃষ্টির মতো।
সর্বাত্মক হামলা শুরুর পর এক সপ্তাহের মধ্যেই পূর্ব ইউরোপের এই দেশটির বহু শহর কার্যত ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর’র তথ্য অনুযায়ী, ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর প্রাণ বাঁচাতে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন ৩০ লাখ ইউক্রেনীয়।