আগামী জাতীয় নির্বাচনকে বানচালের ষড়যন্ত্র হচ্ছে অভিযোগ তুলে তা মোকাবিলা করতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটকে আরও সক্রিয় করে জনগণকে সংগঠিত করার কথা বলেছেন জোটের নেতারা।
ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ উপলক্ষে ১৪ দলীয় জোট আয়োজিত ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন জোটের নেতারা।
তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে উন্নয়ন হচ্ছে। সেটাকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র হচ্ছে। তাদের মোকাবিলা করতে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় ১৪ দলীয় জোটের মুখপাত্র আমির হোসেন আমু বলেন, ৭ মার্চের ভাষণ পুরানো হচ্ছে না। যে যতই শুনুক, কেউ বিরক্ত হচ্ছে না। রাজাকার, আলবদর, আল শামসরা বিরক্তবোধ করতে পারে। কিন্তু আমার বিশ্বাস গোপনে তারাও শোনে। কারণ এটা এমন একটি ভাষণ যা না শোনে পারা যায় না। বলা হয় রবীন্দ্র সংগীত পুরানো হয় না, ঠিক তেমনিভাবে এটিও পুরানো হয় না।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, যারা নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা করে, তারা আবার মাঠে নেমেছে। তাই ১৪ দলীয় জোটকে আরও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
তিনি বলেন, ১৪ দল হলো বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষের প্রগতিশীল দল। যারা ইতিমধ্যে নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য ষড়যন্ত্র করছে, তাদের প্রতিহত করার জন্য এখন থেকেই এই দলকে মাঠে নামতে হবে।
দলটির অপর সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম বলেন, দেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে এখনো স্বাধীনতা বিরোধী চক্র চক্রান্ত করছে। আজকের দিনে আমাদের শপথ হবে, ১৪ দলকে আরও সক্রিয় ও উজ্জীবিত করে এই অপশক্তিকে রাজনৈতিকভাবে প্রতিহত করতে হবে। শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশে যারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান করছে তাদেরকে রাজনৈতিকভাবে বিতাড়িত করতে হবে।
জাতীয় পার্টি জেপির মহাসচিব শেখ শহীদুল ইসলাম বলেন, আজকে জাতির পিতার কন্যার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে সফল অবস্থায় আছে। তবে, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের তিনি যে লক্ষ্য স্থির করেছিলেন, সেই স্তরে আমাদের কিছু ঘাটতি রয়ে গেছে।
তিনি বলেন, আজও আমাদের সরকারি সংস্থার সেবার মান সুশাসনের পর্যায়ে উন্নীত করতে পারে নাই। ঘুষ, দুর্নীতি আমাদের কুঁড়ে কুঁড়ে খায়। দেশে মাস্তান, জঙ্গিবাদীর স্থান রয়েছে। সাম্প্রদায়িক শক্তি মাথা ছাড়া দেওয়ার চেষ্টা করে। গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্র হয়। জনগণের অধিকার সম্পূর্ণরূপে ফেরত দিতে পারিনি। দুর্নীতির হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে পারেনি।
‘বঙ্গবন্ধু কিন্তু দুর্নীতিমুক্ত দেশ, জবাবদিহিমূলক শাসনব্যবস্থা চেয়েছিলেন বলে জনগণের অধিকারকে সম্পূর্ণরূপে সুরক্ষিত করতে চেয়েছিলেন।’
জেপি মহাসচিব বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা বিরোধী চক্র ষড়যন্ত্র করবে। এই ষড়যন্ত্রকে রুখতে হবে। আমাদের সামনে প্রয়োজন রাজনৈতিকভাবে এসব শক্তিকে মোকাবিলা করা। ১৪ দলের প্রয়োজন পলিটিক্যাল টাস্ক সেটআপ করা। করোনার কারণে আমরা জনগণের সামনে যেতে পারেনি। এখন যাবো। জনগণকে সংগঠিত করে, এই ধরনের দেশদ্রোহী ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে পারব।
সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে দাবি করে গণ আজাদি লীগের সভাপতি এস কে শিকদার বলেন, এখন যে চক্রান্ত চলছে, তা মোকাবিলার জন্য আমাদেরকে মানুষের কাছে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ফুটিয়ে তুলতে হবে। মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তিকে বারবার ক্ষমতায় রেখে এ দেশে বঙ্গবন্ধুর চেতনা ও শেখ হাসিনার উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে হবে।
গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন বলেন, আজকে সারা বিশ্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। ঠিক এই সময়ে আবারও ষড়যন্ত্রের জাল বোনা হচ্ছে। আমাদের মনে রাখতে হবে ওই পরাজিত শক্তি, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক শক্তি আবারও নতুনভাবে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তবে, তারা অতীতের মতো এবারও ব্যর্থ হবে।
এ সময় ১৪ দলীয় জোটের ঐক্যকে সুদৃঢ় করে মানুষকে সংগঠিত করার অনুরোধ জানান তিনি।
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও জোটের মুখপাত্র আমির হোসেন আমুর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, কামরুল ইসলাম, জাতীয় পার্টির (জেপি) মহাসচিব শেখ শহীদুল ইসলাম, জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন, বাসদের আহ্বায়ক রেজাউর রশিদ খান, গণআজাদী লীগের সভাপতি এস কে শিকদার প্রমুখ।