নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার একের পর এক বাহানা করছে। এবার নাটক শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন নিয়ে। যে কোনোভাবে তারা নির্বাচনে পার হতে চায়।
মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে নাগরিক ঐক্য আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মান্না বলেন, বাংলাদেশের মানুষের জান চলে যাবে, তারপরও সকাল সকাল এসে টিসিবির ট্রাকের পেছনে লাইন ধরা বন্ধ হবে না। এখন শুধু দাঁড়ানো নয়, দৌড়ানো শুরু হয়েছে। আপনারা (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) উন্নয়ন কোনটাকে বলছেন, মাওয়ার পদ্মা সেতুকে নাকি রাজধানীতে টিসিবির ট্রাকের পেছনে মানুষের লাইন ধরাকে। টিসিবির এই লাইনই প্রমাণ করে মানুষ কত কষ্টে আছে।
তিনি বলেন, পৃথিবীতে আমরাই একমাত্র জাতি যারা মাতৃভাষার জন্য জীবন দিয়েছি। এজন্য ইউনেস্কো এটাকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণা করেছে। তাদের ঘোষণার সময় যারা ক্ষমতায় ছিলেন, তারা বলছেন এটা তাদের কৃতিত্ব। তারা মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট তৈরি করেছেন। এর দ্বারা বাংলা ভাষার কি কোনো উন্নতি হয়েছে? আমরা তো দেখছি, বাংলা এখনো প্রযুক্তির যুগে প্রবেশ করতে পারেনি। সোশ্যাল মিডিয়ায় বাংলা এখনো গ্রহণযোগ্য ভাষা নয়।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বলেন, ১২ বছরে সরকার যাদের তৈরি করেছে, তিন মাসে কি সব পরিবর্তন হয়ে যাবে? নির্বাচন কমিশন তো নির্বাচন করবে না, করবে ডিসি-এসপিরা। দেশে খেলার জন্য নির্বাচনী সমতল মাঠ দরকার। তাই কেয়ারটেকার নয়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার লাগবে।
তিনি আরও বলেন, আগামী ২৫ তারিখ ভাটারায় জনসভার ডাক দিয়েছি। আমরা সেখানে যাব। ওই জনসভার পর পর্যায়ক্রমে ঢাকায় আরও কয়েকটি সভা হবে। প্রতিটি বিভাগ এবং কিছু কিছু জেলায়ও আমরা সভা করব। রফিক, শফিক, সালাম, বরকত থেকে সাহস নিয়ে আমরা ভাত আর ভোটের অধিকারের জন্য লড়াই করছি। মামলা দিয়ে আমাদের কথা বলা বন্ধ করতে পারবেন না।
আলোচনা সভায় নাগরিক ঐক্যের প্রেসিডিয়াম সদস্য মনিরুল ইসলাম বলেন, ভাষা আন্দোলনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি বা জাতীয় পার্টির নেতাদের ব্যক্তিগত অংশগ্রহণ থাকতে পারে, তবে দলীয় কোনো অবদান নেই। ছাত্ররা এই আন্দোলন করেছে, সেখানে আওয়ামী লীগের কেউ ছিল না।
নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার বলেন, ১৯৭১ সালে আমরা নামেমাত্র স্বাধীনতা পেয়েছি, প্রকৃত স্বাধীনতা পাইনি। এখনো কথা বলার অধিকার নেই আমাদের।
সংগঠনটির উপদেষ্টা এস এম আকরাম বলেন, বাংলা ভাষার জন্য জীবন দিয়ে শহীদ হয়েছে এদেশের দামাল ছেলেরা। আমরা ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস পালন করছি। কিন্তু সেই বাংলা ভাষাতেই আমরা মনের কথা বলতে পারছি না। নানান আইন করে আমাদের মুখের ভাষা কেড়ে নেওয়া হচ্ছে, গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে।
আলোচনা সভায় নাগরিক ঐক্যের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাখখারুল ইসলাম, জিল্লুল চৌধুরী দীপু, যুগ্ম সম্পাদক ডা. জাহিদুর রহমান ও নাগরিক ছাত্র ঐক্যের সভাপতি মোশাররফ হোসেন বক্তব্য রাখেন।