প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর রয়েছে গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। ভাষা আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধে এ বাহিনীর সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল উল্লেখযোগ্য।
তিনি আশা করেন, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রতিটি সদস্য দেশপ্রেম ও মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে বাহিনীর সুনাম, ঐতিহ্য ও মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রেখে দেশ ও জাতির শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা ও সার্বিক আর্থসামাজিক উন্নয়নে আরও অবদান রেখে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবেন।
প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) ‘বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এবং ৪২তম জাতীয় সমাবেশ-২০২২’ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে এসব কথা বলেন। এ উপলক্ষে তিনি বাহিনীর সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সদস্যদেরকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর রয়েছে এক গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। ভাষা আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধে এ বাহিনীর সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল উল্লেখযোগ্য। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে এ বাহিনীর সদস্যরা মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল ১২ জন বীর আনসার সদস্য মুজিবনগরের আম্রকাননে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রথম সরকারকে ‘গার্ড অব অনার’ প্রদান করে এ বাহিনীকে করেছে গৌরবান্বিত। ভাষা শহীদ আনসার কমান্ডার আব্দুল জব্বারসহ মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী ৬৭০ জন বীর আনসারসহ সকল শহীদদের গভীর শ্রদ্ধা জানাই।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী দেশের সকল উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ও সাফল্যের অন্যতম অংশীদার। জনসম্পৃক্ত সুশৃঙ্খল এ বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, পরিবার পরিকল্পনা, জনস্বাস্থ্য, দুর্যোগ মোকাবিলা, পরিবেশ রক্ষা, বৃক্ষরোপণ, নারী ও শিশুপাচার রোধ এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাসহ বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রমে অনবদ্য অবদান রাখছে। নারীর ক্ষমতায়ন, জনকল্যাণ ও উন্নত জাতি গঠনে প্রায় ৬১ লাখ সদস্যের এ বাহিনীর বহুমুখী উন্নয়নমূলক কর্মতৎপরতা সত্যিই প্রশংসনীয়। এছাড়াও খেলাধুলা এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে এ বাহিনীর সদস্যরা অসামান্য কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে চলেছেন।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার এ বাহিনীর আধুনিকায়ন ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বাহিনীর সদস্যদের জন্য নতুন পোশাক প্রবর্তন, পারিবারিক রেশন প্রদান, সাধারণ আনসারের রেশন সামগ্রীর পরিমাণ বৃদ্ধি, সাহসিকতা ও সেবামূলক কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ রাষ্ট্রীয় পদক প্রবর্তন, কর্মকর্তাদের জন্য বিভিন্ন গ্রেডে নতুন পদ সৃজন, টিআইদের পদোন্নতি এবং কর্মকর্তা, কর্মচারী ও ব্যাটালিয়ান সদস্যদের বৈদেশিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচন, বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসব ও জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ যেকোনো প্রয়োজনে এ বাহিনীর সদস্যরা আত্মনিবেদিত ও সদা তৎপর। বৈশ্বিক মহামারি করোনা সংক্রমণের শুরুতেই মৃত্যু ঝুঁকি উপেক্ষা করে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম, মাস্ক ও লিফলেট বিতরণ, শ্রমিক সংকটকালে কৃষকের ফসল ঘরে তোলা, ত্রাণ বিতরণ এবং হাসপাতালে আগত রোগীদের সহায়তাকরণসহ করোনা টিকা গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করে নিবন্ধন কার্যক্রমে সহযোগিতা ও কোভিড-১৯ বিশেষায়িত হাসপাতালে দায়িত্ব পালনে এ বাহিনীর সদস্যদের সাহসী উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়।’
প্রধানমন্ত্রী ‘বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এবং ৪২তম জাতীয় সমাবেশ-২০২২’-এর সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।
সূত্র : বাসস