ছিনতাই ও চোরাই মোবাইল ফোন অল্প দামে কিনে আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করে বেশি দামে বিক্রি করছে একটি চক্র। এর সঙ্গে জড়িতরা প্রত্যেকেই মোবাইল ফোন ছিনতাই ও চোর চক্রের সদস্য।
রাজধানীর বনানী এবং নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকা থেকে চুরি ও ছিনতাই করা মোবাইলের কারবারি চক্রের মূলহোতাসহ সাতজনকে গ্রেপ্তারের পর এ তথ্য জানিয়েছে র্যাব। এ সময় বিপুল পরিমাণ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের দেশি বিদেশি মোবাইলফোন, ট্যাব এবং নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়।
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৩ এর অধিনায়ক (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, মোবাইল চোর ও ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা রাজধানীসহ নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় অবৈধ মোবাইল কেনা-বেচায় তৎপর রয়েছে এবং এসব মোবাইল ফোন বিভিন্ন মার্কেটের সামনে ভাসমান দোকানে গোপনে বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়া ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা সুকৌশলে নানা সিন্ডিকেট হোতার সঙ্গে যোগসাজশে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে চুরি এবং ছিনতাই করা মোবাইল ফোন কেনা বেচায় জড়িত রয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) রাতে র্যাব-৩ এর একটি দল রাজধানীর বনানী এবং নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে চুরি ও ছিনতাই করা অবৈধ মোবাইল কারবারি চক্রের সদস্য আবুল হোসেন (২৮), নজরুল ইসলাম (৪৬), তাজুউদ্দিন আহম্মেদ (৪৮), মাঈনউদ্দিন (৩০), সুজন মিয়া (২৩), মো. মানিক (৩০), এবং লিটন মিয়াকে (৪০) গ্রেপ্তার করে।
চক্রটির মূলহোতা আবুল হোসেন (২৮)। তার নেতৃত্বেই ছিনতাইকারী ও চোর চক্রের সদস্যরা সুকৌশলে নানা সিন্ডিকেট হোতার সঙ্গে যোগসাজশে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে চুরি এবং ছিনতাই করা মোবাইল ফোন কম দামে ক্রয় করে সিদ্ধিরগঞ্জ এবং রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার ভাসমান দোকানে বিক্রয় করে আসছিল।
গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে ট্যাব ৬৫টি, টাচ মোবাইল ১০১৫টি, বাটন মোবাইল ৩১৭টি, সিমকার্ড ৬টি এবং নগদ ২০ হাজার ২১০ টাকা উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ছিনতাই ও চোরাই মোবাইল ফোনসমূহ অল্প দামে ক্রয় করে আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করে সুযোগ বুঝে বেশি দামে বিক্রি করত চক্রটি।
ছিনতাইকারীদের প্রধান টার্গেট থাকে পথচারীদের মোবাইল। এসব মোবাইল কম দামে চোরাই মোবাইল কারবারিদের কাছে বিক্রি করা হয়। এরপর মোবাইলগুলোর আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করে বিভিন্ন চক্রের যোগসাজশে বিভিন্ন মার্কেটের সামনে ভাসমান দোকানে গোপনে বিক্রি করা হতো। আর এসব চোরাই মোবাইলের মূল ক্রেতা মূলত স্বল্প আয়ের শ্রমজীবী মানুষ। আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করার কারণে এসব মোবাইল পরবর্তীতে উদ্ধার করা সম্ভব হয় না।
র্যাব-৩ অধিনায়ক বলেন, বাংলাদেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ডাকাতি, ছিনতাই ও চোরাইমাল বিক্রি ও হেফাজতে রাখা আমলযোগ্য অপরাধ হওয়া সত্ত্বেও দীর্ঘদিন যাবত তারা নির্বিঘ্নে এ কাজ করে আসছিল। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।