কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে মাকে দড়ি দিয়ে বেঁধে রেখে মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে বিয়ের কাবিননামায় সই করানোর ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। বুধবার (১ জুন) রাতে ওই তরুণীর মা ঘটনার মূলহোতা তিতাসকে প্রধান আসামি করে ১০ জনের নামে মামলা করেন। এ ছাড়া আরও ৮-১০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
মামলার ৮ নম্বর আসামি মো. ফারুককে (৪৩) ইতোমধ্যেই গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তার ফারুক উপজেলার পান্টি ইউনিয়নের পান্টি গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে। প্রধান আসামি গোলাম দস্তগীর তিতাস (৪৫) পান্টি এলাকার মৃত ইব্রাহিম বিশ্বাসের নাতি। আর ভুক্তভোগী তরুণী এ বছর স্থানীয় একটি প্রতিষ্ঠান থেকে স্নাতক (সম্মান) সম্পন্ন করেছেন।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় ইন্টারনেট ব্যবসায়ী রোমান ও লাহোরী গত মঙ্গলবার (৩১ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তিতাসসহ বেশ কয়েকজনকে নিয়ে ভুক্তভোগী তরুণীর বাড়িতে প্রবেশ করে। এ সময় তাদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র, দা, ডাসা, দড়ি ছিল। এরপর তরুণীর মা ও বাড়িতে থাকা ভাড়াটিয়াদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে এবং তরণীর মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে কাবিননামায় সই করিয়ে নিয়ে চলে যায়।
এ ঘটনায় তরুণীর মা গতকাল (বুধবার) বিকেলে কুমারখালী থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগের ভিত্তিতে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ফারুক নামে একজনকে আটক করে পুলিশ। ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় বুধবার রাতেই থানায় মামলা রুজু হয়। উক্ত মামলায় আটক ফারুককে ৮ নম্বর আসামি করা হয়।
এ বিষয়ে মামলার বাদী ও তরুণীর মা বলেন, তিতাস স্থানীয় সন্ত্রাসী বাহিনী ভাড়া করে আমার বাড়িতে জোরপূর্বক প্রবেশ করে। পরে আমাকে দড়ি দিয়ে বেঁধে বাড়ির সবাইকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে এবং মেয়ের মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে কাবিননামায় সই করিয়ে নিয়ে চলে যায়। থানায় মামলা করেছি। আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।
ভুক্তভোগী তরুণী বলেন, প্রায় ২০১৬ সাল থেকে তিতাস আমাকে বিয়ের কথা বলে আসছে। মাঝেমধ্যেই বিয়ের প্রস্তাব দেয়। মঙ্গলবার রাতে হঠাৎ সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে এসে বিয়ের কথা বলে। আমি রাজি না হওয়ায় মাকে বেঁধে রেখে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। এক পর্যায়ে মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে হত্যার হুমকি দেয় এবং কাবিননামায় সই করিয়ে নেয়।
তিনি আরও বলেন, আর কোনো মেয়ের জীবনে ও পরিবারে যেন এমন ঘটনা না ঘটে। সেজন্যই সঠিক বিচার প্রত্যাশা করি।
এ বিষয়ে কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, বাড়িতে প্রবেশ করে মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে তরুণীকে কাবিননামায় সই করিয়ে নেওয়ার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। তরণীর মা বাদী হয়ে মামলা করেন। উক্ত মামলায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।