বোট ক্লাবে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে সাভার থানায় চিত্রনায়িকা পরীমণির দায়ের করা মামলায় ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তুহিন সিদ্দিকী অমিসহ তিন জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত।
বুধবার (১৮ মে) সকালে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৯ এর বিচার মো. হেমায়েত উদ্দিন অভিযোগ গঠন করেন। সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ১ আগস্ট পরবর্তী তারিখ ধার্য করা হয়েছে।
মামলার বাকি আসামি হলেন— নাসিরের সহযোগী শাহ শহীদুল আলম। এই মামলার সব আসামিই বর্তমানে জামিনে আছেন।
আদালত অভিযোগ পড়ে শোনালে আসামিরা নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। এর আগে মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে আসামিদের করা পৃথক আবেদন খারিজ করে দেন ট্রাইব্যুনাল।
গত বছরের ৬ সেপ্টেম্বর এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সাভার মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ কামাল হোসেন ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছিলেন।
এতে উত্তরা ক্লাব লিমিটেডের সাবেক সভাপতি নাসির ইউ মাহমুদ ও তার সহযোগী তুহিন সিদ্দিকী অমিসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। প্রাথমিক তথ্য বিবরণীতে (এফআইআর) শাহ শহীদুল আলমের নাম না থাকলেও তদন্তের সময় সম্পৃক্ততা পাওয়ায় পুলিশ অভিযোগপত্রে তার নাম অন্তর্ভুক্ত করে।
ওই সময় তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) মাধ্যমে মামলার পুনর্তদন্তের আবেদন জানান পরীমণি। আবেদনপত্রে উল্লেখ করা হয়, তদন্তকারী কর্মকর্তা সঠিক ও সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করেননি। ওই হোটেলের একজন ওয়েটার ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে অভিযুক্ত ছিলেন। ঘটনার পরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) তাকে তুলে আনে। এসময় ওই ওয়েটার অপরাধ স্বীকার করেন। পুলিশের জমা দেওয়া অভিযোগপত্রে তাকে আসামি করা হয়নি। এমনকি তার নামই অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়নি।
গত বছরের ১৩ জুন রাতে ফেসবুক পোস্টে পরীমণি অভিযোগ করেন, ৯ জুন উত্তরার বোট ক্লাবে তাকে ধর্ষণ ও হত্যার চেষ্টা চালান ব্যবসায়ী নাসির ইউ মাহমুদ ও তার সহযোগীরা। এ ঘটনায় তিনি সাভার থানায় ৬ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।
পরীমণির মামলা দায়েরের পর উত্তরায় তুহিন সিদ্দিকী অমির বাসায় অভিযান চালিয়ে নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও অমিসহ পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। অমির বাসায় তল্লাশি চালিয়ে এক হাজার পিস ইয়াবা, বিদেশি মদ ও বিয়ার জব্দ করা হয়।
এরপর ১৪ জুন রাত ১২টা ৫ মিনিটে ডিবির গুলশান জোনাল টিমের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মানিক কুমার সিকদার বাদী হয়ে রাজধানীর বিমানবন্দর থানায় নাসির, অমিসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে আরেকটি মামলা দায়ের করেন।
মাদকের মামলায় কয়েক দফা রিমান্ড শেষে ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদকে কারাগারে পাঠানো হয়। পরে জামিনে মুক্তি পান তিনি।