সিএনএম প্রতিবেদকঃ
পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, পুলিশে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন এসেছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সফলতার সঙ্গে কাজ করছে বাংলাদেশ। প্রশিক্ষণ ও প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ নজর। আমরা দক্ষিণ এশিয়ার লিডিং ফোর্স হতে চাই। এজন্য পুলিশ সদস্যদের বিশ্বমানের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
মাস্টার্স ইন অ্যাপ্লাইড ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ ম্যানেজমেন্ট (এমএসিপিএম) ডিগ্রির সার্টিফিকেট প্রদান অনুষ্ঠানে একথা বলেন তিনি।
মঙ্গলবার (৯ মার্চ) দুপুর ১২টায় রাজধানীর মিরপুর-১৪ পুলিশ স্টাফ কলেজের ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স সেন্টারে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইজিপি বলেন, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সমুন্নত রাখতে আমরা পুলিশকে সুসংহত ও পেশাগত বাহিনী হিসেবে গড়তে চাই। সেজন্য প্রশিক্ষণের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। এজন্য পুলিশের প্রত্যেকটি স্তরের সদস্যদের প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হচ্ছে। পুলিশ একটি ইন্টারন্যাশনাল সার্ভিস, পুলিশকে ছাড়া কোনো দেশ চিন্তা করা যায় না। বাংলাদেশ সরকার পুলিশের সক্ষমতা বাড়াতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। মানুষের প্রত্যাশা বাড়ছে, পুলিশও এগিয়ে যাচ্ছে।
ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, প্রশিক্ষণের পুরাতন কাঠামো বাদ দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে নতুন কাঠামো তৈরি করা হয়েছে। বেসিক ট্রেনিং পাঠ্যক্রম আধুনিকায়ন করা হয়েছে। সে অনুযায়ী পুলিশের প্রত্যেক স্তরের কর্মকর্তা সদস্যদের প্রশিক্ষণের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। পুলিশ স্টাফ কলেজ এক্ষেত্রে থিঙ্ক-ট্যাঙ্ক হিসেবে কাজ করছে, আশা করছি আগামী দু’বছর পর জনগণ এর সুফল পাবে।
গত ১২ বছর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে প্রভুত উন্নয়ন ঘটেছে দাবি করে আইজিপি বলেন, দেশের উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ বাহিনীর উন্নয়ন প্রয়োজন। সেটা খুবই চ্যালেঞ্জিং। আমরা সে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছি। আগামী ২০৪১ সালের উন্নত বাংলাদেশের পুলিশ হবো, যাতে দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করতে পারি।
পুলিশ স্টাফ কলেজ বাংলাদেশের রেক্টর ড. মো. নাজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স সেন্টারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য ড. মো. মশিউর রহমান।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন এমডিএস (একাডেমিক অ্যান্ড রিসার্চ) মো. গোলাম রসুল। গোপালগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার আয়েশা সিদ্দিকা ডিগ্রি অর্জনকারীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন।
অতিরিক্ত আইজি (এঅ্যান্ডও) ড. মো. মইনুর রহমান চৌধুরী, অতিরিক্ত আইজি এসবি মীর শহীদুল ইসলাম, এপিবিএন’র অতিরিক্ত আইজি মোশাররফ হোসেন, টিঅ্যান্ডআইএম’র অতিরিক্ত আইজি ইব্রাহিম ফাতমী, অতিরিক্ত আইজি (অর্থ) এস এম রুহুল আমিন, অতিরিক্ত আইজি (এইচআরএম) মাজহারুল ইসলাম, এটিইউ’র অতিরিক্ত আইজি কামরুল আহসান, ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এবং আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশ সদর দফতরের জনসংযোগ দফতর সূত্রে জানা যায়, প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ব্যাচের মোট ৫৭ জন ডিগ্রি অর্জনকারীকে সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। এরমধ্যে প্রথম ব্যাচে ১৪ জন, দ্বিতীয় ব্যাচে ১৯ জন এবং তৃতীয় ব্যাচে ২৪ জন রয়েছেন। তাদের মধ্যে বাংলাদেশ পুলিশের ৩১ জন, সশস্ত্র বাহিনীর ৬, আইনজীবী ৩, করপোরেট সার্ভিস ৭, শিক্ষক ৩, চিকিৎসক ১, সাংবাদিক ১ জন এবং অন্যান্য সরকারি চাকরিজীবী ৫ জন রয়েছেন।
তিনটি ব্যাচে ডিগ্রি অর্জনকারী ৫৭ জনের মধ্যে সর্বোচ্চ ফলাফল লাভ করেছেন গোপালগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার আয়েশা সিদ্দিকা।
২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষ হতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বাংলাদেশ পুলিশের অ্যাপেক্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট পুলিশ স্টাফ কলেজ বাংলাদেশ থেকে মাস্টার্স ইন অ্যাপ্লাইড ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ ম্যানেজমেন্ট ডিগ্রি দেওয়া হচ্ছে।