সাভারের আশুলিয়ায় ধর্ষণের ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা না নিয়ে মীমাংসার অভিযোগ আশুলিয়া থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফরিদুল আলমকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আশুলিয়া থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) জিয়াউল ইসলাম।
এর আগে গত ২৬ মার্চ ধর্ষণের ঘটনা মীমাংসা করেন এসআই ফরিদুল আলম। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে মামলা দায়ের করে অভিযুক্ত আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার মো. সাকিব ভূঁইয়া আশুলিয়ার ঘোষবাগের ঘোষবাগ প্রাইমারি স্কুল সংলগ্ন এলাকার মো. শাহ আলম ভূঁইয়ার ছেলে। তিনি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এশিয়ান ইউনিভার্সিটি আশুলিয়া ক্যাম্পাস শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। অভিযোগ ওঠার পর তাকে বহিষ্কার করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সাভারের আশুলিয়ায় বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এক পোশাকশ্রমিককে ধর্ষণ করেন ছাত্রলীগ নেতা সাকিব ভূঁইয়া। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী পোশাকশ্রমিককে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে প্রায় ৫ ঘণ্টা একটি ‘ল’ চেম্বারে বসিয়ে রাখা হয়। শেষ পর্যন্ত দেখা না দিয়ে মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেন সাকিব। গত ২৬ মার্চ ভুক্তভোগীকে থানায় ডেকে নিয়ে আড়াই লাখ টাকা দিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়।
এর আগে ওই পোশাকশ্রমিক ২১ মার্চ থানায় লিখিত অভিযোগ করলে তদন্তের ভার পরে আশুলিয়া থানার এসআই মো. ফরিদুল আলমের ওপর। পরে অভিযুক্তের সঙ্গে আঁতাত করে টাকার বিনিময়ে ঘটনাটি মীমাংসা করেন তিনি। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে গত ১১ এপ্রিল আবার ভুক্তভোগী পোশাকশ্রমিককে থানায় ডেকে নিয়ে আসামির বিরুদ্ধে মামলা নেয় পুলিশ।
ভুক্তভোগী পোশাকশ্রমিক বলেন, এসআই ফরিদ ও আরও কয়েকজন স্থানীয় লোক থানায় বসেই আমাকে আড়াই লাখ টাকা দিয়ে ঘটনার মীমাংসা করায়। তারা বলে- মামলায় গেলে অনেক ঝামেলা, অনেক খরচ, তুমি মীমাংসা করে নাও। এ বিষয়ে আমার আর কোনো অভিযোগও ছিল না। সেই টাকা থেকে আমার কাছে বিভিন্ন খরচাপাতির কথা বলে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন উপস্থিতরা। আমি ৪০ হাজার টাকা টেবিলের ওপর রেখে দিয়ে চলে আসি। এরপর থেকে আমি আমার মতো এলাকায় বসবাস করে আসছিলাম। পরে গত ১১ এপ্রিল আবার আমাকে ডেকে নিয়ে মামলা করান এসআই ফরিদুল। এখন আমি সব ভুলে গেছি। তারা আবার আমাকে আগের স্থানেই নিয়ে এসেছে।
এ বিষয়ে এসআই ফরিদুল আলম বলেন, আমি আজকে থেকে জেলা পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত। আমি কারও কাছ থেকে টাকা নেইনি। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিও গ্রেপ্তার হয়েছে।
এ ব্যাপারে আশুলিয়া থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) জিয়াউল ইসলাম বলেন, মামলা সংক্রান্ত একটি জটিলতার নিয়ে এসআই ফরিদুল আলমকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে।
ঢাকার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার বলেন, পুলিশে যে কোনো সময় ব্যবস্থা বা বদলি হয়ে থাকে। এটা কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না, এটি অভ্যন্তরীণ বিষয়।