দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ফরহাদ মিয়ার (৩৫) বাড়ি নেত্রকোনায়। ধান কাটার মেশিন ভাড়া নিতে ৫০ হাজার টাকা সঙ্গে নিয়ে পূর্ব পরিচিত মাহাবুবকে সঙ্গে নিয়ে পঞ্চগড়ে আসেন। সেখান থেকে কাজ শেষে বাসায় ফেরার উদ্দেশ্যে রওনা হন। পথিমধ্যে রংপুর নগরীর মর্ডাণ মোড়ে পৌঁছে একসঙ্গে ইফতার করেন। রাতে একসঙ্গে তারবীর নামাজও পড়েন। এর পরই সঙ্গী মাহাবুবের পরিকল্পনায় অপহরণের শিকার হন তিনি।
ফরহাদ দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হওয়ায় মাহাবুব আগেই তার পূর্বপরিচিত অন্য তিন যুবকের সহযোগিতায় অপহরণ পরিকল্পনার ছক করে রাখেন। সুযোগ বুঝে ফরহাদকে ভয়ভীতি দেখিয়ে মারপিট করে চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে তাকে আটকে রাখে।
এরপর ৬ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে ফরহাদের মোবাইল হতে তার বাবাকে ফোন করে অপহরণকারীরা। চাঁদা না দিলে ফরহাদকে হত্যা করার হুমকিও দেয় তারা। নিরুপায় হয়ে ঘটনাটি র্যাবকে জানায় ফরহাদের ভাই।
ঘটনাটি জানার পর র্যাব-১৩ ছায়া তদন্ত শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় গত বুধবার (৬ এপ্রিল) সকালে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে রংপুর নগরীর মর্ডাণ মোড় থেকে অপহৃতকে উদ্ধার করে।
একইসঙ্গে অপহরণের সাথে জড়িত নেত্রকোনার মৃত আব্দুল গফুরের ছেলে মাহাবুব (২৪), রংপুর নগরীর মনজুত আলীর ছেলে রুবেল (২০), শাহিন মিয়ার ছেলে মোনায়েম (১৮), এবং মজতুল মিয়ার ছেলে মুন্নাকে (১৮) আটক করা হয়।
শুক্রবার (৮ এপ্রিল) বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন র্যাব-১৩ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মাহমুদ বশির আহমেদ।
তিনি আরও জানান, গত ৩ এপ্রিল রোববার সুনামঘঞ্জের দিরাই হতে ধান কাটার মেশিন ভাড়া নিতে পঞ্চগড়ে আসেন ফরহাদ ও মাহাবুব। পরদিন সোমবার অপহরণের ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পার না হতেই অপহৃত যুবককে উদ্ধারসহ জড়িত অপহরণকারীদের আটক করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মাহবুব আগে থেকেই অপহরণের পরিকল্পনা করে রেখেছিল বলে স্বীকার করেন। এই অপকর্ম বাস্তবায়নের জন্য অন্য তিনজনকে আগে থেকেই খবর দিয়ে রেখেছিলেন।
আটকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে রংপুর মহানগর পুলিশের তাজহাট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান র্যাবের ওই কর্মকর্তা।