ঢাকা: কপালে টিপ পরে শনিবার নিজ কর্মস্থলের দিকে হেঁটে যাচ্ছিলেন তেজগাঁও কলেজের শিক্ষিকা ড. লতা সমাদ্দার। রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় তাকে উদ্দেশ্য করে কটূক্তি করেন একজন পুলিশ সদস্য।
জিডির সেই কপি ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। আর ঘটনাটির প্রতিবাদে কপালে টিপ পরা ছবি পোস্ট করছেন অসংখ্য নারী। শুধু নারী নন, পুরুষরাও কপালে টিপ পরে ছবি তুলছেন। আর তা ফেসবুকে পোস্ট করছেন। জানাচ্ছেন প্রতিবাদ।
অপূর্ব ইব্রাহিম নামের একজন সংবাদকর্মী টিপ পরা ছবি দিয়ে ফেসবুকে লিখেছেন, ‘হোক প্রতিবাদ। ’
অনেকে লিখছেন, ‘বাংলাদেশের কোন সংবিধানে, কোন আইনে লেখা আছে যে, একজন নারী টিপ পরতে পারবে না। ’
বাংলাদেশ টেলিভিশনের অনুষ্ঠান প্রযোজক পন্নী নিয়োগী তার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘কপাল যদি আকাশ হয়, টিপ সে আকাশের চাঁদ…। ’
বিষয়টি নিয়ে এক ফেসবুক পোস্টে ইসলামিক বক্তা আহমাদুল্লাহ লিখেছেন, কপালে টিপ দেওয়া নারীকে রাস্তায় কেউ হেনস্থা করলে সেটা নিন্দাযোগ্য কাজ। কোনো নারীকে হিজাবের কারণে হেনস্থা করা হলে সেটাও নিন্দনীয় ও অন্যায় কাজ।
রোববার (৪ এপ্রিল) জাতীয় সংসদে এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ সুবর্ণা মুস্তাফা। তিনি অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
সুবর্ণা মুস্তাফা বলেন, দল-মত নির্বিশেষে বিশেষ করে নারী সমাজের জন্য অত্যন্ত ঘৃণিত একটি ঘটনা। ইভটিজিং আমরা শুনে এসেছি। বখাটে ছেলেরা স্কুলের বাচ্চা বাচ্চা মেয়েদের ইভটিজ করে। সেই পরিস্থিতি এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রিত। কিন্তু আমি যখন দেশের আইনরক্ষাকারী কাউকে ইভটিজিংয়ের ভূমিকায় দেখি, তখন সেটা আমাদের সবার জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক।
সরকারি দলের এই সংসদ সদস্য বলেন, আমি কোন দল রিপ্রেজেন্ট করি এগুলো তার ঊর্ধ্বে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী সবসময় বলেন, মানুষ আগে, সবাই সমান, মানুষের অধিকার সবার আগে। বঙ্গবন্ধু জাতির পিতা বলেছেন, মানুষকে ভালোবাসতে হবে, তার কথা বলার অধিকার, তার জীবন যাপনের অধিকার, তার মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বিষয়টি নিয়ে মামলাও করেছেন ওই শিক্ষিকা। আমি অনুরোধ করব যে, মন্ত্রণালয় বা বিভাগ এ বিষয়টি দেখেন, তারা যদি এখনো এ বিষয়টি নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ না নিয়ে থাকেন, তারা যেন দ্রুত এ বিষয়ে জোরালো পদক্ষেপ নেন। আশা করি তারা দ্রুত বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখবেন।