ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, সব মানুষ ভয়ের মধ্যে আছে, নানা রকমের ভয়। মেয়েদের নিরাপত্তা নেই, জীবিকার নিরাপত্তা নেই, চলাফেরার নিরাপত্তা নেই।
রাস্তায় বের হলে গাড়ি চাপা পড়ে মরে যেতে হয়, জিনিসপত্রের দাম অসম্ভব বাড়ছে। আবার কোথায় কোন কথা বললে বিপদ হবে, সে ভয়ও আছে। একদিকে ভীতির সংস্কৃতি, আরেকদিকে বিচারহীনতার সংস্কৃতি। আমরা বোধ হয় পরাজিত হয়ে গেছি।
শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে অবস্থিত জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে তানভীর মুহাম্মদ ত্বকীর ২৬তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত ‘সপ্তম জাতীয় ত্বকী চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতা ২০২১’- এর পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ত্বকী হত্যার বিচার আমরা চাই, অবশ্যই সে বিচার হবে। কিন্তু এ বিচার শুধু নয়, ত্বকীরা যাতে এখানে নিরাপদে থাকতে পারে, মেধা-প্রতিভা বিকাশ করতে পারে, এ সমাজ যাতে মানবিক হয়, তা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে।
সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক ও ত্বকীর বাবা কবি রফিউর রাব্বীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শিক্ষাবিদ ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী, কবি হালিম আজাদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শওকত আরা হোসেন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, বাংলাদেশ ৫০ বছর পেরিয়ে এসেছে। আমরা ঘটা করে সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করেছি। আসলে আমাদের পালন করা উচিত বিবর্ণজয়ন্তী। ১১ জন মিলে নির্মমভাবে ত্বকীকে হত্যা করেছে বলে ২০১৪ সালে র্যাব প্রতিবেদন দিয়েছিল। আজও সেই মামলার চার্জশিট উপস্থাপন করা হয়নি। ত্বকী হত্যার অপরাধীরা আজও বুক ফুলিয়ে হেঁটে বেড়ায়।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ত্বকী হত্যার বিচার করুন। আগামী বছর যাতে এ মঞ্চে দাঁড়িয়ে বিচারের দাবি না করে বিচারের জন্য ধন্যবাদ জানাতে পারি।
সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, এ হত্যার সঙ্গে প্রভাবশালীরা জড়িত। রাষ্ট্র তাদের ভয় পায় কি না, আমরা জানি না। তা না হলে কেন তার হত্যার বিচার করা হবে না। আমার দৃঢ় বিশ্বাস এ হত্যার বিচার আমরা পাব। প্রধানমন্ত্রীর সুনজরে এ বিচার একদিন হবে। আজ হোক আর কাল, এ হত্যার বিচার হবে।
সভাপতির বক্তব্যে কবি রফিউর রাব্বী বলেন, রাষ্ট্র কত বর্বর হতে পারে সেটি দেখা যায় ত্বকী হত্যার মধ্য দিয়ে। এর মধ্যে দিয়ে আমরা রাষ্ট্রের চরিত্র বুঝতে পারি। বহু ক্ষেত্রে আমরা পরাধীন রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছি। স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম যে করেছি তা বাস্তবায়িত হয়েছি কি না, সে প্রশ্ন তুলতে হবে।