ইউক্রেনের শরণার্থী ইস্যু বিষয়ক এক প্রশ্নে হেসে ফেলায় সমালোচনার মুখে পড়ে পড়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। বৃহস্পতিবার পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশে ঘটেছে এই ঘটনা।
এক রাষ্ট্রীয় সফরে বৃহস্পতিবার পোল্যান্ডে গিয়েছিলেন কমলা হ্যারিস। সেখানে দেশটির প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেই দুদার সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। বৈঠক শেষে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে আসেন কমলা ও আন্দ্রেই।
ওই সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক ইউক্রেনের শরণার্থী প্রসঙ্গে দুই নেতাকে প্রশ্ন করেন। তার প্রশ্ন ছিল— যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের শরণার্থীদের গ্রহণ করবে কি না এবং এক্ষেত্রে পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট যুক্তরাষ্ট্রকে কোনো প্রকার সুপারিশ করবেন কি না।
প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার আগে কমলা হ্যারিস তার পাশে দণ্ডায়মান পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্টের দিকে তাকান এবং বলেন, ‘বিপদেই বন্ধুর পরিচয়’. এ কথা বলার পর হেসে ফেলেন তিনি এবং বেশ কয়েক সেকেন্ড পর্যন্ত তার সেই হাসি ছিল।
এর মধ্যেই দুদা বলেন, ইউক্রেনের শরণার্থীদের নিরাপত্তা রক্ষায় কূটনৈতিক প্রক্রিয়া জোরদার করার জন্য ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রকে আহ্বান জানিয়েছে পোল্যান্ড।
পরে কমলা হ্যারিস বলেন, রুশ অভিযান শুরুর পর ইউক্রেন থেকে পোল্যান্ডে প্রতিদিন যে বিপুল পরিমাণ শরণার্থী আসছে—সে বিষয়ে দুই নেতার মধ্যে আলোচনা হয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের শরণার্থীদের নেবে কিনা— সে বিষয়ে কোনো উত্তর দেননি কমলা।
এদিকে সমাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে এই ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর অনেকেই মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্টের সমালোচনা করে টুইট করেছেন। এক টুইটার ব্যবহারকারী বলেছেন, ‘এটা একেবারেই বেমানান ও অগ্রহণযোগ্য। এখানে হাসির কী আছে?’
২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পররাষ্ট্রনীতি উপদেষ্টা প্যানেলের সদস্য জর্জ পাপাডোপৌলোস বিদ্রুপ করে টুইটবার্তায় বলেন, ‘পোল্যান্ডের নেতার সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে কমলা হ্যারিস খুবই মনযোগী ছিলেন। এই হাসিই তার প্রমাণ।’
আরেক ব্যবহারকারী বলেছেন, ‘ইউক্রেনে যে মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে, তা গত ৮০ বছরেও দেখা যায়নি। এই অবস্থায় দমবন্ধ হয়ে আসার কথা, আর তিনি হাসছেন!’
অবশ্য এবারই প্রথম নয়, এর আগেও বেমানান সময়ে হেসে খবরের শিরোনাম হয়েছেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট। এ সম্পর্কি সর্বশেষ ঘটনাটি ঘটেছিল গত বছর, যখন আফগানিস্তান থেকে মার্কিন নাগরিক ও সহায়তাকারী আফগানদের ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে চরম বিশৃঙ্খলার পরিচয় দিয়েছিল মার্কিন প্রশাসন।
সে সময় এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকরা এ বিষয়ে একের পর এক প্রশ্ন করা শুরু করলে কমলা হ্যারিস হাসতে হাসতে বলেছিলেন, ‘বসুন, বসুন…সবাই শান্ত হয়ে বসুন।’