ঢাকা: বিভিন্ন মসজিদের ইমাম-হাফেজ পরিচয়ে ফোন করে সহায়তার নামে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
সিআইডির এক নারী কর্মকর্তাকে ফোন করে সহায়তা চাইলে বেরিয়ে আসে এই প্রতারণার চিত্র।
তারা প্রায়ই ফোনে নিজের স্ত্রী হাসপাতালে মারা গেছে বলে বিল পরিশোধের জন্য সহায়তা চাইতেন। তারা দীর্ঘদিন ধরে ধর্মীয় অনুভূতিকে ব্যবহার করে প্রতারণা করে আসছিলেন।
গ্রেফতাররা হলেন- আব্দুল মান্নান শেখ (৪২), মো. কামরুল ওরফে কামরুজ্জামান (৩৪), আসাদুল্লাহ আল গালিব (২৬), মো. আমিনুর রহমান (৩৯) ও (৫) মো. শওকত আলী খান সাগর (৪৩)।
মঙ্গলবার (৮ মার্চ) দুপুরে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন।
তিনি বলেন, চক্রের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে নিজেদেরকে ঢাকা শহরের বিভিন্ন মসজিদের ইমাম পরিচয় দিয়ে নামের সঙ্গে মুফতি ও হাফেজ টাইটেল ব্যবহার করে আসছিলেন। তারা বিভিন্ন শ্রেণির সরকারি ও বেসরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং ব্যবসায়ীদের কাছে এই পরিচয়ে ফোন দিতেন।
নিজেকে মসজিদের ইমাম-মোয়াজ্জেম পরিচয়ে তারা বলতেন, তাদের স্ত্রী ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। হাসপাতালে বিল বকেয়ে রয়েছে। তাই হাসপাতাল থেকে লাশ নিয়ে দাফন-কাফন করতে পারছেন না। টাকার প্রয়োজন উল্লেখ করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিতেন।
প্রথমে তারা রাজধানীর বিভিন্ন টার্গেট ব্যক্তির নাম, ঠিকানা জেনে তারপর বড় মসজিদের ইমাম পরিচয় দিয়ে ফোন দিতেন। এভাবে চক্রটি জনপ্রতি ২০-২৫ হাজার টাকা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
গ্রেফতারদের কাছ থেকে বিভিন্ন ক্লাব ও অ্যাসোসিয়েশন মেম্বারদের নাম-ঠিকানা ও ব্যক্তিগত তথ্যসহ মোবাইল নম্বর সম্বলিত ডাইরেক্টরি উদ্ধার করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ঢাকা গুলশান ক্লাব, উত্তরা ক্লাব, ঢাকা ক্লাব, ঢাকা গলফ ক্লাব, চিটাগাং বোট ক্লাব, বারিধারা কসমোপলিটন ক্লাব, মহাখালী ডিওএইচএস কাউন্সিল ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন মেম্বারদেরসহ সর্বমোট পয়ত্রিশটি ডাইরেক্টরি উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেফতার ব্যক্তিদের মোবাইলের বিকাশ নম্বরের স্টেটমেন্ট পর্যালোচনা করে দেখা যায়, প্রতি মাসে প্রত্যেকে প্রায় দেড় থেকে দুই লাখ টাকা হাতিয়ে নেন।
তারা করোনাকলীন সময়ে অর্থাৎ দুই বছরের অধিক সময় ধরে এই প্রতারণা করে আসছেন বলেও জানান সিআইডির এই কর্মকর্তা।