শরীয়তপুর প্রতিনিধিঃ
শরীয়তপুরের ডামুড্যায় পারিবারিক কলহের জেরে আমেনা বেগম (৩৬) নামের এক গৃহবধূকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় স্বামী নজরুল ইসলাম মাদবরকে (৪০) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড় ৯টার দিকে উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ পাড়ায় এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ১৫০ শয্যার শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্র জানায়, ১৫ বছর আগে ইসলামপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ পাড়া গ্রামের মৃত হোসেন মাদবরের ছেলে নজরুল ইসলাম মাদবরের সঙ্গে একই ইউনিয়নের গঙ্গেসকাঠি গ্রামের মৃত আজিদ আলী মাদবরের মেয়ে আমেনা বেগমের বিয়ে হয়। তাদের নয়ন মাদবর নামে ১২ বছর বয়সী একটি ছেলে রয়েছে।নজরুল ইসলাম মাদবর মালয়েশিয়ায় রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। সেখানে ছাদ থেকে পড়ে তার দুই পা ভেঙে যায়। সুস্থ হয়ে করোনা মহামারির সময় ৭ মাস আগে দেশে চলে আসেন। স্ত্রীসহ তিনি শরীয়তপুরের বাড়িতেই থাকতেন। ছেলে নয়ন ঢাকার একটি মাদরাসায় পড়াশোনা করে। সে ঢাকায় থাকে।
হত্যাকাণ্ডের সময় নজরুল ইসলামের একতলা ভবনের কক্ষে তার স্ত্রী ছাড়া কেউ ছিল না। এ সুযোগে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে আমেনাকে হত্যা করা হয়।
হত্যার পর ফেসবুক লাইভে আসেন নজরুল। লাইভে তার স্ত্রী আমেনা বেগমকে খাটের ওপর তোশক দিয়ে মোড়ানো অবস্থায় দেখান। এক পর্যায়ে তাকে গাইতে শোনা যায়, ‘আমার খাইয়া, আমার পইরা ডুব দিছে ভাই অন্যজনরে।’
লাইভ দেখার পর বিষয়টি জানাজানি হলে নজরুল ইসলামের মা আনার কলি (৮০), ভাগনি সোহাদি আক্তার (২৫), ছোট ভাইয়ের স্ত্রী আছিয়া বেগমসহ (২৩) প্রতিবেশীরা দরজা পেটাতে থাকেন। কিন্তু নজরুল ইসলাম দরজা খোলেননি। পরে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ এসে দরজা খুলে তাকে গ্রেফতার করে এবং আমেনা বেগমকে উদ্ধার করে।
এলাকাবাসীর অনেকেই বলেন, নজরুল একজন মাদকাসক্ত। তারা অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) এস এম আশরাফুজ্জামান বলেন, স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যার দায়ে নজরুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়েছে।লাশ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।