ওরা আমায় এভাবে কেনো মা’র’ল মা??………
মা আমি তো যেমন ডিউটিতে যাই সেরকমই ডিউটিতে গেছিলাম, কিন্তু আমি তো জানতাম না যে আজই হবে আমার শে’ষ দিন!! আমি তো আমার জুনিয়র দের সাথে একসাথে কতো গল্প করতে করতে রাতের খাবার খেয়েছিলাম, জানো মা অনলাইন থেকে অর্ডার করে আনিয়েছিলাম আমার প্রিয় খাবারটা,ওটাই আজ খেয়েছিলাম, তখনও যদি একটু বুঝতে পারতাম এটাই শেষ খাওয়া , এটাই শেষ গল্প ….. ডিউটির বাঁধনে আমি যখন ক্লান্ত হয়ে গেলাম মা, আমার চোখ দুটো ঘুমে বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল, একটু শরীরের ক্লান্তি মেটাতে গেলাম, তখনও যদি বুঝতাম মা, সারাজীবনের মতো বিশ্রামে চলে যাবো, তখন ভোররাত আমি ওয়ার্ডে একা তখন, ভোরের শীতল বাতাসে আমার একটু ঠান্ডা লাগতে আমি লাল চাদর টা ঢাকা দিয়ে একটু চোখ বন্ধ করেছিলাম শুধু,,, সেই সময়ের অপেক্ষায় থাকা ওরা আমার সাথে….. ছিঃ!!! মা আমার খুব কষ্ট হচ্ছিল জানো তো অনেক অনেক বার আমি বারণ করেছিলাম, চিৎকার করেছিলাম ” বাঁচাও বাঁচাও কে আছো আমাকে বাঁচাও!!” কিন্তু কেউ আমার চিৎকার, আমার আ’র্তনা’দ শুনতে পায়নি জানোতো মা, আর ওরা আরও পশুর থেকেও বিচ্ছিরি ব্যবহার করতে লাগলো….. খেলতে লাগলো আমাকে নিয়ে ওরা!!! আমি ওদের হাতে পায়ে পড়লাম জানো তো, আমি এটাও বললাম যে ” আমাকে ছেড়ে দাও,দয়া করে, ছেড়ে দাও, আমি কাউকে কিছু বলব না, আমাকে যেতে দাও…” কিন্তু ওরা আর আমায় তোমার কাছে একবার যাওয়ার সুযোগটা দিলো না, দিলো না তোমার কোলে শেষ বারের মতো মাথা রাখতে দিতে, দিলো না শেষবার তোমার হাসি ভরা মুখ টা দেখার সুযোগ , দিলো না বাবার স্বপ্নে তার রাজকন্যার বড়ো ডাক্তার হওয়ার কাহানী কে সত্য করতে !!! আমার গ’লা টি’পে ধরে নিজেদের সর্ব শক্তি দিয়ে আমার গলা চে’পে ধরে জানো মা, আমি অনেক চেষ্টা করেছিলাম বাঁচার কিন্তু হয়তো আজ ভগবান ও চায়নি যে আমি হয়তো বেঁচে থাকি। ওই পশুদের শক্তির কাছে আমি হেরে যাই, আমার গ’লার হাড় ভে’ঙে যায়…ওরা আমায় ওভাবেই ওখানে ফেলে রেখে চলে যায় ওই বিব’স্র ভাবে….. সকালে সবাই আসে ,কিন্তু একি!! আআআ মি কারোর সাথে কথা কেনো বলতে পারছিনা? তোমাকেও দেখতে পাচ্ছি, তোমায় কত করে ডাকছি তুমি শুনতে কেনো পারছোনা মা, আমার ডাক?? ওওও মা, মা গো এইতো দেখো দেখোনা মা, ও মা এইতো আমি, তুমি কাঁদছো কেনো?? কি হয়েছে তোমার?? ও মা!!! দেখি মা সামনে একটা লাশের দিকে তাকিয়ে হাউমাউ করে কাঁ’দছে, লা’শটার মুখ দেখতে পেয়ে আআআমি শিউরে উঠি…. এ কিহ!!! এটা যে আমারই নিথর দেহ!!! আমি কি তবে মা’রা গেছি?? আমিও কাঁদতে শুরু করলাম, সবাই আমার এই মৃ’ত্যু তে শো’কাহত…. সারা দুনিয়া আমার মৃ’ত্যুর ঘটনা আপাতত জেনে গেছে, সবাই বিদ্রোহ করছে!!! কিন্তু আমি আমার নি’থর দে’হের দিকে তাকিয়ে রইলাম!! আমার শেষটা তো আরো ভালো হতে পারত বলো মা?? দেখো না মা ওরা আমার মুখের, দেহের কী বিচ্ছিরি অবস্থা করেছে দেখো মা!! আমার চিৎকার করতে ইচ্ছে করছে!!! কিন্তু আমার আওয়াজ এখনো কেউ শুনতে পারছে না, আমি এতগুলো লোকের সামনে চিৎকার করছি,কিন্তু একটা কেউ আমার এই চিৎকার শুনতে পারছে না!! কেউ না……..
সংগ্রহ ———–