সিএনএম:
ফাঁকা বাসাবাড়ি আগে থেকেই নজরে রাখতো একটি চোর চক্র। পরে সময়-সুযোগ বুঝে গ্রিল কেটে এবং তালা ভেঙে বাসায় ঢুকে ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন, নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার চুরি করতো। এভাবে চক্রটি গত দুই বছর ধরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার শতাধিক বাসায় চুরি করেছে।
রবিবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. জাফর হোসেন।
পুলিশ জানায়, সম্প্রতি রাজধানীর লালবাগের একটি ভবনের ফাঁকা তিনটি বাসা থেকে দুটি ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন, নগদ ১০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার চুরির ঘটনা তদন্তে নেমে ওই চক্রের সাত জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তারা হলো– মো. সঞ্জীব (২৪), মো. হেলাল উদ্দিন (২৪), মো. রনি (৩০), মো. রিপন (৩২), মো. তরিকুল ইসলাম (৩০), মো. শামীম (২৩) ও মো. আরিফুল ইসলাম ওরফে সুমন (৩৩)। তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ব্রান্ডের ৪৮টি ল্যাপটপ, পাঁচটি মোবাইল ফোন এবং নগদ ছয় লাখ ২৪ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
চুরি করা ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন ও স্বর্ণালংকার রাজধানীর বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন মার্কেটে বিক্রি করা হতো জানিয়ে ডিসি মো. জাফর হোসেন বলেন, ‘গ্রেফতার ব্যক্তিরা প্রথমে একটি বাসার আগাম খোঁজ-খবর নিতো। বাসা ফাঁকা থাকলে চুরির টার্গেট করতো। যে বাসাগুলোতে সিকিউরিটি গার্ড থাকে না সেগুলোকে টার্গেট করতো তারা।’
তিনি বলেন, ‘ঘটনাস্থলে গিয়ে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে চোর চক্রের চার সদস্যকে শনাক্ত করা হয়। পরে চুরি যাওয়া একটি মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে সাত জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সের একটি দোকানে ল্যাপটপ কেনাবেচার কথা জানা গেছে। সেখানে অভিযান চালিয়ে চুরি যাওয়া দুটি ল্যাপটপসহ চোরাই ৪৮টি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়। দোকানি সুমন গ্রেফতার রনির কাছ থেকে কম দামে এসব ল্যাপটপ কিনতেন।’
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘গ্রেফতার ব্যক্তিরা শনির আখড়ায় একটি কারখানায় কাজ করতো। সেখান থেকে চুরি করার জন্য ঐক্যবদ্ধ হয় তারা। রাজধানীর কদমতলী, সূত্রাপুর, কলাবাগ, লালবাগ ও ওয়ারীসহ বিভিন্ন থানার একাধিক মামলায় তারা গ্রেফতারও হয়েছে।’
বাসাবাড়িতে সিসি ক্যামেরা লাগালে চুরি থেকে রেহাই মিলতে পারে। চুরি হলেও সহজেই চোর ধরা যাবে বলেও জানান তিনি।
ল্যাপটপ চুরির পর কারও ব্যক্তিগত ছবি, ভিডিও কিংবা তথ্য ফাঁস করা হতো কিনা জানতে চাইলে ডিসি বলেন, ‘বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সের দোকানটি চোর চক্রের কাছ থেকে কম দামে ল্যাপটপ কিনতো। এরপর সেগুলো ফরম্যাট দেওয়ার পর উইন্ডোজ দিয়ে বিক্রি করতো। তারা গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস কিংবা ফাঁসের হুমকি দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিতো না।’
উদ্ধার ৪৮টি ল্যাপটপের মালিকানার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সিআইডির ল্যাবে ফরেনসিক করে ল্যাপটপের মালিকানার তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এরপর সেগুলো তুলে দেওয়া হবে সঠিক মালিকের হাতে।’