সিএনএমঃ
ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে কুয়ায় ফেলে দুই বছরের কন্যা শিশু হত্যার রহস্য উন্মোচন করেছে থানা পুলিশ। উপজেলার পূর্ব ঘিলাভূই গ্রামে বিশুদ্ধ পানির কুয়া থেকে আয়েশা খাতুন নামে দুই বছরের শিশুকে ফেলে হত্যার ঘটনায় পুলিশের কাছে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন ঐ শিশুর মা আম্বিয়া খাতুন। এ কাজে সহায়তা করেছেন নিহত শিশুর বাবা বাদশা মিয়া।
এ ঘটনায় বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) নিহতের দাদি জুবেদা খাতুন বাদী হয়ে দুই জনকে আসামী করে হালুয়াঘাট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-১৩। মামলায় আসামীরা হলেন, ঘিলাভূই গ্রামের মৃত মফিজ খার মেয়ে আম্বিয়া খাতুন (৩০) ও মৃত রহমত উল্লাহর পুত্র বাদশা মিয়া (৩৫)। আজ সকালে তাদের আদালতে প্রেরণ করা হয়। আদালতে আম্বিয়া খাতুন এ হত্যাকান্ড নিজেই করেছেন বলে জবানবন্দি দিয়েছেন। এ কাজে তার স্বামী বাদশা মিয়া তাকে সহায়তা করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হালুয়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহিনুজ্জামান খান।
থানা পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা যায়, বেশ কিছুদিন ধরে আম্বিয়ার সাথে তার বড় ভাই তোফাজ্জল হোসেন ও তার আত্মীয়দের জমির ওয়ারিশ নিয়ে বিরোধ চলছিলো। এ ঘটনায় তাদের ফাঁসাতে হত্যার পরিকল্পনা করে নিহতের মা ও বাবা। পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৩ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার রাতের কোন এক সময় আম্বিয়া পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তার দুই বছরের শিশু কন্যাকে বালিশ চাপা দিয়ে প্রথমে হত্যা করে। পরে রাতের অন্ধকারে পাশ্ববর্তী হালিমা খাতুনের বিশুদ্ধ পানির কুয়াতে লাশ ফেলে আসে। এ ঘটনায় তার স্বামী তাকে সহযোগীতা করে। বিষয়টি ভিন্নভাবে উপস্থাপনের জন্য তোফাজ্জল হোসেন হত্যা করেছে বলে ছড়িয়ে দেয়। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। পুলিশের জিজ্ঞাসার মুখে অবশেষে হত্যা কান্ড নিজেই করেছে বলে স্বীকার করে আম্বিয়া।
মামলার বাদী নিহতের দাদি জুবেদা খাতুন বলেন, এরা অমানুষ। জমির ওয়ারিশের জন্য নিজের কন্যাকে কেউ এভাবে হত্যা করতে পারে। আমি এদের ফাঁসি চাই। আর যেন কোন বাবা মা নিজের সন্তানকে এভাবে হত্যা করতে না পারে।
হালুয়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো. শাহিনুজ্জামান খান বলেন, আমাদের প্রথম থেকেই সন্দেহ হয়েছিলো। গভীর রাতে দুই বছরের শিশু হেটে হেটে কুয়াতে পড়তে পারে না। আর শিশুটি যেহেতু মা-বাবার সাথে ছিলো। তাই তাৎক্ষনিক আমরা নিহত শিশুর পিতা-মাতা’কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসি। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে নিহত শিশুর মা আম্বিয়া তার ভাই তোফাজ্জল ও তার আত্মীয়দের ফাঁসাতেই হত্যা কান্ড ঘটিয়েছে বলে স্বীকার করে। এ ঘটনায় তার স্বামী তাকে সহযোগীতা করেছে। বিষয়টি অত্যন্ত মর্মান্তিক।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলার পূর্ব ঘিলাভূই গ্রামের বাদশা মিয়ার বসতভিটার পাশে বিশুদ্ধ পানির জন্য নির্মিত কুয়াতে দুই বছরের শিশু কন্যা আয়েশা খাতুনের লাশ ছিলো। প্রথমে এলাকাবাসী ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে বিষয়টি জানতে পারে। পরে উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।