শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজপাকসের ভাই এবং দেশটির সাবেক অর্থমন্ত্রী বাসিল রাজাপাকসে পার্লামেন্ট থেকে পদত্যাগ করেছেন। বৃহস্পতিবার (৯ জুন) নিজেই এই তথ্য জানিয়েছেন তিনি।
দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটিতে চলমান গুরুতর অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে প্রভাবশালী রাজাপাকসে পরিবারের দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে সরকার থেকে সরে গেলেন তিনি।পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়ার সময় বাসিল রাজাপাকসে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজ থেকে আমি আর কোনো সরকারি কর্মকাণ্ডে সংশ্লিষ্ট থাকব না। তবে আমি রাজনীতি থেকে সরে যেতে পারব না এবং যাবও না।
এর আগে চলমান অর্থনৈতিক সংকটের জেরে সৃষ্ট গণবিক্ষোভের কারণে গত মাসে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের বড় ভাই মাহিন্দা রাজাপাকসে। অবশ্য প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়লেও মাহিন্দা এখনও সংসদ সদস্য রয়ে গেছেন।
উল্লেখ্য, ১৯৪৮ সালে ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীনতা লাভ করে শ্রীলঙ্কা। এরপর থেকে তামিল সংকটসহ বহু সমস্যা মোকাবিলা করতে হয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার এই দ্বীপরাষ্ট্রটিকে। বর্তমানে আর্থিক সংকট ভয়াবহ রূপ নিয়েছে দেশটিতে। এই সংকট থেকে আদৌ পুনরুদ্ধার করা সম্ভব কি না, তা নিয়ে সন্দিহান বিশেষজ্ঞরা।
এই পরিস্থিতির জন্য প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে-সহ গোটা রাজাপাকসে পরিবারকে দায়ী করছে লংকানরা। কারণ করোনাভাইরাস মহামারি, উচ্চাভিলাষী ও অলাভজনক বিভিন্ন প্রকল্পে সরকারের বিনিয়োগ, ত্রুটিপূর্ণ করনীতি ও সরকারি অব্যবস্থাপনার কারণে শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ ব্যাপকভাবে কমে গেছে।
আর এই কারণেই দীর্ঘদিন ধরেই প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন চলছে। দল, মত, সম্প্রদায় নির্বিশেষে শ্রীলঙ্কার নাগরিকরা একজোট হয়ে রাস্তায় নেমেছেন। চলছে প্রতিবাদ, বিক্ষোভ।
অবশ্য পদত্যাগের দাবিতে দেশের জনগণ আন্দোলন চালিয়ে এলেও দিন দু’য়েক আগে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে বলেছেন, মেয়াদের বাকি দুই বছর পূর্ণ করেই ক্ষমতা ছাড়বেন তিনি। একইসঙ্গে আগামী নির্বাচনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না বলেও জানিয়েছেন।
গত সোমবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আমাকে পাঁচ বছরের জন্য ম্যান্ডেট দেওয়া হয়েছে। মেয়াদ পূর্ণ করেই ক্ষমতা থেকে বিদায় নেব। পরবর্তীতে নির্বাচনে আমি আর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব না।
সূত্র: রয়টার্স।