জয়পুরহাটের কালাইয়ে প্রতিবেশীকে ফাঁসাতে স্ত্রীকে হত্যার ঘটনায় স্বামী-ছেলেকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। রোববার (২৯ মে) রাত ১১টার দিকে জয়পুরহাট চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আতিকুর রহমান তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে শনিবার (২৮ মে) সকালে জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার দুধাইল (নয়াপাড়া) গ্রামে মোছা. শিপন (৪০) নামে এক গৃহবধূর গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী-সন্তানকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মঈনুদ্দিন।
নিহত ওই গৃহবধূ দুধাইল (নয়াপাড়া) গ্রামের তোজাম উদ্দিনের স্ত্রী। তিনি চার সন্তানের মা ছিলেন। গ্রেপ্তাররা হলেন- শিপনের স্বামী তোজাম উদ্দিন (৫০) ও ছেলে শিহাব উদ্দিন (২০)।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার রাতে মোছা. শিপন তার আট বছরের এক ছেলেকে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন। রাত ৩টার দিকে ওই ঘরে তার স্বামী ও বড় ছেলে প্রবেশ করে। এরপর ছুরি দিয়ে তাকে গলা কেটে হত্যা করে। এ সময় ছোট ছেলের চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন এবং লাশ দেখতে পান।
খবর পেয়ে শনিবার সকালে ঘটনাস্থলে পুলিশ, সিআইডি ও ডিবি পুলিশ পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় গৃহবধূর স্বামী তোজাম উদ্দিন, ছেলে শিহাব ও প্রতিবেশীসহ পাঁচজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নেওয়া হয়। পরে স্বামী-ছেলে হত্যার দায় স্বীকার করলে প্রতিবেশী তিনজনকে থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মঈনুদ্দিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে বলেন, প্রতিবেশী আইনুলের সঙ্গে আসামিদের জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল। প্রতিবেশীদের ফাঁসিয়ে জমি রেজিস্ট্রি করানোর জন্য স্বামী নিজেই তার স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা করে। তার বড় ছেলে আলামত নষ্ট করার চেষ্টা করে। এ ঘটনায় পাঁচজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে স্বামী ও সন্তান হত্যার বিষয়টি স্বীকার করলে অন্যদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় নিহত গৃহবধূর ভাই শাহজাহান আলী বাদী হয়ে বাবা-ছেলেকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। আসামিদের আদালতে পাঠানো হলে রাত ১১টার দিকে তারা বিচারকের কাছে জবানবন্দি দেয়। পরে আদালতের বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।