ইসরায়েলের একটি শহরে হামলায় তিন ইসরায়েলি নাগরিক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন। বৃহস্পতিবার (৫ মে) ইহুদি এই দেশটির স্বাধীনতা দিবস ছিল। দেশজুড়ে স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের মধ্যেই ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলীয় ইলাদ শহরে এই হামলা ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটল।
এদিকে এই ঘটনাকে সন্ত্রাসী হামলা বলে সন্দেহ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি পুলিশ। শুক্রবার (৬ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স এবং সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও আলজাজিরা।
ইসরায়েলি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম দাবি করেছে, দু’জন হামলাকারী ছুরি, কুড়াল বা উভয় অস্ত্র নিয়ে ইলাদ শহরের একটি পার্কে পথচারীদের ওপর হামলা করে। এ ঘটনার পর অভিযুক্তদের ধরতে অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। এছাড়া রাস্তা অবরোধ করে যানবাহনেও তল্লাশি চালাচ্ছে তারা।
বৃহস্পতিবার ছিল ইসরায়েলের স্বাধীনতা দিবস। মধ্যপ্রাচ্যের মাটিতে বিতর্কিত পন্থায় ইহুদি এই দেশটির প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে এদিন ইসরায়েলে ছিল সরকারি ছুটি। ইসরায়েলের একজন স্বেচ্ছাসেবী চিকিৎসক বলেছেন, ‘এই ঘটনাটি আমার হৃদয়ে গভীরভাবে গেঁথে থাকবে।’
মতি সিনভার্ট ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম জেরুজালেম পোস্টকে বলেছেন, বৃহস্পতিবারের হামলায় নিহতরা পার্কে সতেজ বাতাসে শ্বাস নিতে বেরিয়েছিলেন এবং এসময়ই তাদের জীবন কেড়ে নেওয়া হলো।
বিবিসি বলছে, হামলার পর ইলাদ শহরের বাসিন্দাদের বাড়ির ভেতরেই অবস্থানের নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। শহরের জনসংখ্যার অধিকাংশই ইসরায়েলের কট্টর-অর্থোডক্স ইহুদি সম্প্রদায়ের সদস্য বলেও জানিয়েছে ব্রিটিশ এই সংবাদমাধ্যমটি।
এদিকে হামলা ও প্রাণহানির বিষয়ে টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়ার লাপিদ বলেছেন, ‘স্বাধীনতা দিবসের আনন্দ মুহূর্তের মধ্যে মাটি হয়ে গেল। ইলাদে রক্তাক্ত হামলা ও প্রাণহানির এই ঘটনায় আমার হৃদয় ব্যথিত।’
উল্লেখ্য, ইসরায়েলে সম্প্রতি হামলা ও প্রাণহানির ঘটনা বেড়েছে। সাধারণ ইসরায়েলিদের পাশাপাশি হামলার শিকার হচ্ছেন ইহুদি এই দেশটির আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও। গত ২৭ মার্চ ইসরায়েলে বন্দুকধারীদের হামলায় দুই পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হন।
ইসরায়েলি নিরাপত্তা কর্মকর্তারা সেসময় জানিয়েছিলেন, রাজধানী তেল আবিব থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার (৩০ মাইল) উত্তরে অবস্থিত হাদেরা শহরে পুলিশ কর্মকর্তাদের ওপর হওয়া ওই হামলায় অভিযুক্ত দুই হামলাকারী ইসরায়েলের আরব নাগরিক।
এই ঘটনার দিন দু’য়েক আগে ইসরায়েলের একটি শপিং সেন্টারে দেশটির একজন আরব নাগরিকের হামলায় চারজন ইসরায়েলি নিহত হন। এ ঘটনায় আহত হয়েছিলেন আরও বেশ কয়েকজন।
এছাড়া গত এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে ইসরায়েলের তেল আবিবে বন্দুকধারীর গুলিতে অন্তত দু’জন ইসরায়েলি নিহত হন। এ ঘটনায় আহত হয়েছিলেন আরও আটজন।