সিএনএমঃ
রাজধানীর শ্যামপুর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি রনি আলমকে মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১০।
গত জুলাই ২০২৪ খ্রিঃ হতে দেশব্যাপী কোটা বিরোধী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু হয়। অতঃপর উক্ত আন্দোলনে ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক, আইনজীবীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করে এবং পরবর্তীতে তা গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়। কোটা ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে রাজধানী বিভিন্ন এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামীলীগের বিভিন্ন শ্রেণীর নেতাকর্মী ও অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা দেশী-বিদেশী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আন্দোলনকারী নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার উপর অতর্কিত আক্রমণ করে। যার অংশ হিসেবে গত ০৪ আগস্ট ২০২৪ খ্রিঃ তারিখ সন্ধ্যা আনুমানিক ১৯:০০ ঘটিকায় ছাত্রলীগ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা রাম দা, হকি স্টিক, লোহার রড, লাঠি-সোটা ইত্যাদিসহ বিভিন্ন প্রকার অস্ত্র শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে রাজধানীর শ্যামপুর থানাধীন জুরাইন এলাকায় এ*স. আহমেদ নামক একটি সি.এন.জি. পাম্পে* ব্যাপক ভাংচুর করে। এ সময় উক্ত সন্ত্রাসীরা উল্লেখিত পাম্পের ০২টি তেলের ডিসপেন্সারে আগুন দিয়ে সম্পূর্ন পুড়িয়ে ফেলে যাতে প্রায় ১৫,০০,০০০/- (পনেরো লক্ষ) টাকা, ৮০০০ লিটার ডিজেল পাইপ দিয়ে ফেলে দিয়ে প্রায় ১০,০০,০০০/- (দশ লক্ষ) টাকা, পাম্পের অফিসে ভাংচুর করে প্রায় ৫,০০,০০০/- (পাঁচ লক্ষ) টাকা, সি.এন.জি. মিশিনের ডিসপেন্সার ভাংচুর করে প্রায় ৭০,০০,০০০/- (সত্তর লক্ষ) টাকা, ০৪টি সিসি ক্যামেরা ভেঙ্গে প্রায় ১,৫০,০০০/- (এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার) টাকা, পাম্পের টেংকিতে আগুন দিয়ে প্রায় ৫০০০ লিটার অকটেন পুড়িয়ে প্রায় ৬,৭৫,০০০/- (ছয় লক্ষ পঁচাত্তর হাজার) টাকাসহ সর্বমোট আনুমানিক ১,০৮,২৫,০০০/- (এক কোটি আট লক্ষ পঁচিশ হাজার) টাকার ক্ষতি সাধন করে। এছাড়াও সন্ত্রাসীদের ভাংচুরে বাধা প্রদান করায় উক্ত পাম্পে ম্যানেজারসহ একাধিক কর্মচারীদের মারধর করে জখম করে ঘটনাস্থল হতে চলে যায়। পরবর্তীতে উক্ত পাম্পের ম্যানেজার মোঃ খাইরুল আলম (৫০) স্থানীয় লোকজনদের সহযোগীতায় পাম্পের আগুন নিভিয়ে আহতদের চিকিৎসার প্রদান করেন এবং বিষয়টি পাম্পের মালিককে জানায়। পরবর্তীতে পাম্পের মালিক ও ম্যানেজার বিভিন্ন সিসি টিভির ফুটেজ যাচাই-বাছাই করে আসামীদের চিহ্নিত করে রাজধানীর শ্যামপুর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি রনি আলমসহ ৪৮ জন এবং অজ্ঞাতনামা আরো ১০০/১৫০ জন নাশকতাকারীদের বিরুদ্ধে ০১টি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-০৩, তারিখ-২৬/০৮/২০২৪ খ্রিঃ, ধারা-১৪৩/৪৪৭/৪৪৮/৪৩৫/৪৩৬/৪২৭/৩২৩/৩৪/১০৯ দন্ড বিধি। মামলা রুজুর বিষয়টি জানতে পেরে উক্ত নাশকতাকান্ডে জড়িত সকল আসামীরা আত্মগোপনে চলে যায়।
ঘটনাটি জানতে পেরে র্যাব-১০, সিপিসি-১ যাত্রাবাড়ী ক্যাম্পের একটি আভিযানিক দল উল্লখিত নাশকতাকান্ডে জড়িত পলাতক সকল আসামীদের আইনের আওতায় আনার লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি ও তৎপরতা বৃদ্ধি করে।
গত ২৯ অক্টোবর ২০২৪ খ্রিঃ তারিখ রাত আনুমানিক ২২:০০ ঘটিকায় র্যাব-১০, সিপিসি-১ যাত্রাবাড়ী ক্যাম্পের উক্ত আভিযানিক দল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ও তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর থানাধীন সানবাড়ী চার রাস্তার মোড় এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে। উক্ত অভিযানে উল্লেখিত শ্যামপুর থানাধীন জুরাইন এলাকায় এস. আহমেদ নামক একটি সি.এন.জি. পাম্পে ব্যাপক ভাংচুর ও পুড়িয়ে আনুমানিক ১,০৮,২৫,০০০/- (এক কোটি আট লক্ষ পঁচিশ হাজার) টাকার ক্ষতি সাধন করার অভিযোগে দায়েরকৃত নাশকতার মামলার এজাহারনামীয় পলাতক আসামী শ্যামপুর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি রনি আলম (৩০), পিতা-জাহাঙ্গীর আলম, সাং-উত্তর জুরাইন, থানা-শ্যামপুর, জেলা-ঢাকা’কে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামী উল্লেখিত ঘটনার সাথে তার সম্পৃক্তার সত্যতা স্বীকার করেছে।
গ্রেফতারকৃত আসামীকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।