চীনে এখন লোকজন করোনাভাইরাসের চেয়ে লকডাউনকে বেশি ভয় পায়। আর এই ভয় পাওয়ার পেছনে বড় কারণও আছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাংহাই ও অন্যান্য শহরে করোনার নমুনা সংগ্রহের কিছু অস্বস্তিকর ভিডিও আসার পর অনেকে দেশটির কর্তৃপক্ষের সমালোচনা করেছেন।
ভিডিওতে কোনও কোনও ব্যক্তিকে মাটিতে ফেলে চার-পাঁচজন মিলে ধরে, আবার কারও গলা চেপে ধরে, বুকে হাঁটু তুলে দিয়ে নাক এবং গলায় কাঠি ঢুকিয়ে করোনার নমুনা নিতে দেখা যায়।
এ ধরনের একটি ভিডিও টুইটারে প্রচুর মানুষের নজর কেড়েছে। এতে দেখা যায়, করোনা পরীক্ষার জন্য এক ব্যক্তি এক নারীকে মাটিতে ফেলে বুকের ওপর বসে দুই হাঁটু দিয়ে হাত চেপে ধরেছেন। আর ওই নারী উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন। এ সময় তার পাশে থাকা এক স্বাস্থ্যকর্মী নাকে কাঠি ঢুকিয়ে করোনার নমুনা সংগ্রহ করেন।
ভিডিওর শুরুতে দেখা যায়, চীনের একটি করোনা পরীক্ষা কেন্দ্রে এক নারীকে মেঝেতে ফেলে তার বুকের ওপর চেপে বসেছেন এক ব্যক্তি। এ সময় ওই নারী চিৎকার করেন এবং জোর করে নমুনা সংগ্রহে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন।
পরে তিনি জোর করে নারীর মুখ খোলেন এবং তখনই হ্যাজমাট স্যুট পরিহিত এক স্বাস্থ্যসেবা কর্মী সোয়াবের নমুনা নেন। তবে এই ভিডিওটির সত্যতা নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই ভিডিও অনেককে বিস্মিত করেছে। একজন টুইটারে লিখেছেন, ‘কি ভয়ানক! তারা কীভাবে দরিদ্র মানুষকে বশে আনছে! এসব দুঃখজনক, একেবারে সহ্য করা যায় না।’
চীনে করোনা মহামারির প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেক শহরে কড়া বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এমনকি নিত্য-প্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য কেনার জন্যও লোকজন বাড়িঘর থেকে বের হতে পারছেন না। লোকজনকে জোর করে ধরে করোনার নমুনা নেওয়ার কিছু ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়েছে।
এ রকম একটি ভিডিওতে দেখা যায়, বাধ্যতামূলক কোভিড পরীক্ষার জন্য চীনা স্বাস্থ্যসেবা কর্মীরা গত মাসে জোর করে একজন বৃদ্ধের বাড়িতে প্রবেশ করেন। পরে ওই বৃদ্ধকে জোর করে মাটিতে শুইয়ে ছয় থেকে সাতজন চেপে ধরেন এবং নাক ও গলা থেকে নমুনা নেন।
এই ভিডিও প্রথমে চীনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম উইবোতে পোস্ট করা হয়। পরে সেখান থেকে অন্যান্য প্ল্যাটফর্মেও ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওটি কোথায় ধারণ করা হয়েছিল, সেটি জানা যায়নি।
তবে সাংহাইয়ে যখন এক মাসের বেশি সময় ধরে কঠোর লকডাউন জারি আছে, তখন এই ভিডিওটি সামনে এসেছে। মহামারির প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসাবে রাজধানী বেইজিংয়ে ইতোমধ্যে ৪০টিরও বেশি সাবওয়ে স্টেশন ও ১৫৮টি বাসের রুট বন্ধ করে দেওয়া হয়ে
পাকিস্তানি দৈনিক দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বন্ধ হয়ে যাওয়া বেশিরভাগ স্টেশন এবং রুট বেইজিংয়ে করোনার প্রাদুর্ভাবের কেন্দ্রস্থল চাওয়াং জেলার। বেইজিংয়ের ১৬টি জেলার মধ্যে অন্তত ১২টিতে ইতোমধ্যে দ্বিতীয় দফায় করোনা পরীক্ষা চলছে।
গত সপ্তাহে তিন দফায় গণহারে পরীক্ষা চালানো হয়। অন্যদিকে, সাংহাইয়ে লকডাউন তুলে নেওয়ার কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।