দুই বন্ধুকে নিয়ে ৩ লাখ ১৬ হাজার টাকা ছিনতাইয়ের নাটক সাজিয়েছিলেন মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের এক কর্মী। রাজশাহীর দুর্গাপুরের এ ঘটনার চার দিন পরই জারিজুরি ধরে ফেলেছে পুলিশ। শুক্রবার (২৯ এপ্রিল) তিনজনকেই আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
দুই বন্ধুসহ গ্রেপ্তার হয়েছেন দুর্গাপুরে নগদের ডিস্ট্রিবিউশন সেলস অফিসার জাহিদ হাসান (২৭)। তার দুই বন্ধু হলেন আবু বাক্কার (৩৩) ও জাফর হোসেন (২৫)।
জাহিদ হাসান রাজশাহী নগরীর বেলপুকুর থানার আগলা এলাকার কোরবান আলীর ছেলে। আবু বাক্কার বেলপুকুর থানার মোল্লা জামিরা এলাকার খোশবর আলীর ছেলে ও জেলার চারঘাটের হলিদাগাছি এলাকার জামাল উদ্দিনের ছেলে জাফর হোসেন।
জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইফতেখায়ের আলম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, গত ২৪ এপ্রিল নগদের ডিস্ট্রিবিউশন সেলস অফিসার জাহিদ হাসানকে চাকু দিয়ে আহত করে ৩ লাখ ১৬ হাজার টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। তবে ঘটনাটি ছিল পূর্বপরিকল্পিত। ওই ঘটনার কথিত ভুক্তভোগী জাহিদ হাসান তার দুই বন্ধুর মাধ্যমে ছিনতাইয়ের নাটকটি সাজান।
পুলিশের জেরার মুখে জাহিদ জানান, তিনি আট মাস ধরে নগদে কর্মরত। তিনি মাদকাসক্ত। ইতোমধ্যে নগদে লেনদেনের প্রায় দুই লাখ টাকা ব্যক্তিগত কাজে খরচ করে ফেলেছেন। এ ছাড়া অনেকের কাছে ধারদেনাও রয়েছে। অর্থ আত্মসাৎ করে ঘাটতি মেটাতে তিনি ছিনতাই নাটক সাজান।
পরিকল্পনা মাফিক ২৪ এপ্রিল দুপুরবেলা দুর্গাপুরের জয়নগর থেকে ভাগলপাড়া যাওয়ার পথে ফাঁকা রাস্তায় দুই বন্ধুকে ডেকে নেন। ব্যাগে থাকা নগদ লেনদেনের টাকা ও দুটি মোবাইল তাদের দিয়ে দেন। এরপর নিজের কাছে থাকা একটি চাকু দিয়ে নিজের ডান হাত হালকাভাবে কেটে দেন।
কিছু সময় পর অপর একজনের মোবাইল থেকে তার প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র কর্মকর্তাকে ফোন দিয়ে জানান, ছিনতাইকারীরা তাকে ছুরিকাঘাত করে সঙ্গে থাকা নগদের লেনদেনের ৩ লাখ ১৬ হাজার টাকা ও দুটি মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে গেছে।
ছিনতাইয়ের ঘটনা বিশ্বাসযোগ্য করতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন। পরে এ ঘটনায় দুর্গাপুর থানায় মামলা হয়। এরপর তদন্তে নেমে ওই নগদ কর্মীর জারিজুরি ধরে ফেলে পুলিশ।
গ্রেপ্তারের পর ঘটনা স্বীকার করেন তিনজন। তাদের কাছে ৩ লাখ ১৬ হাজার টাকাও পাওয়া যায়। এ নিয়ে পরে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশের মুখপাত্র।