আফগানিস্তানের অর্থমন্ত্রী হিসেবে এক সময় দেশটির সংসদে ৬ বিলিয়ন ডলারের বাজেট উপস্থাপন করেছিলেন খালিদ পায়েন্দা। গত বছরের মাঝের দিকে দেশটির ক্ষমতায় তালেবান আসার পর কাবুল ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান তিনি। বর্তমানে পরিবারের সদস্যদের ব্যয়ভার মেটানোর জন্য ওয়াশিংটন ডিসিতে উবারের চালক হিসেবে কাজ করছেন সাবেক এই আফগান অর্থমন্ত্রী।
মার্কিন দৈনিক ওয়াশিংট্ন পোস্টের সঙ্গে আলাপকালে খালিদ পায়েন্দা বলেন, গত সপ্তাহে একরাতে ছয় ঘণ্টা গাড়ি চালিয়ে ১৫০ ডলারের কিছু বেশি উপার্জন করেছেন তিনি।
গত বছরের আগস্টে মার্কিন-সমর্থিত সরকারকে উৎখাত করে কাবুলের ক্ষমতায় আসে তালেবান। বিশ্বের অনেক দেশ এখনও তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি। বিদেশে থাকা অর্থ জব্দ করায় আফগানিস্তান বর্তমানে আর্থিক এবং মানবিক সংকটের সম্মুখীন হয়েছে।
কাবুলের নিয়ন্ত্রণ তালেবানের হাতে চলে যাওয়ার এক সপ্তাহ আগে আফগান অর্থমন্ত্রীর পদ ছাড়েন খালিদ পায়েন্দা। প্রধানমন্ত্রী আশরাফ গনির সঙ্গেও তার সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছিল সেই সময়।
গত বছরের ১০ আগস্ট এক টুইট বার্তায় পায়েন্দা বলেছিলেন, ‘আজ আমি ভারপ্রাপ্ত অর্থমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ালাম। অর্থ মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্ব দেওয়াটা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে বড় সম্মানের। কিন্তু ব্যক্তিগত অগ্রাধিকারের বিষয়গুলোর জন্য পদত্যাগ করার সময় এসেছে।’
পরে গ্রেফতার হওয়ার ভয়ে তিনি আফগানিস্তান ত্যাগ করেন এবং যুক্তরাষ্ট্রে পরিবারের সাথে মিলিত হন। ওয়াশিংটন পোস্টকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে খালিদ পায়েন্দা বলেন, দেশ ছেড়ে চলে আসার পর সবকিছুর সঙ্গে সমন্বয়ের জন্য বেশ বেগ পোহাতে হয়েছে। তবে
পরিবারকে সাহায্য করার সুযোগ পাওয়ায় তিনি কৃতজ্ঞ।
আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করেছেন তিনি। খালিদ পায়েন্দা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র-নেতৃত্বাধীন পশ্চিমারা সৈন্য প্রত্যাহার করে নেওয়ার কারণে তালেবান ক্ষমতায় এসেছে।
তালেবানের হাতে রাজধানী পতনের দিনে কাবুলে বিশ্ব ব্যাংকের কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো এক ক্ষুদে বার্তায় আফগান সাবেক এই অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, জনগণের জন্য কাজ করবে এমন একটি ব্যবস্থা তৈরি করতে আমাদের ২০ বছর সময় লেগেছে এবং এতে পুরো বিশ্বের সমর্থন ছিল। আমরা যা তৈরি করেছি, তা ছিল তাসের ঘর যা দ্রুত ভেঙে পড়েছে। দুর্নীতির ভিতের ওপর তাসের ঘর তৈরি করা হয়েছিল।