সিএনএম প্রতিনিধিঃ
রাজধানীর বাবুবাজার ব্রিজের পাশে আরমানিটোলায় ছয়তলা হাজী মুসা ম্যানসন ভবনে কেমিক্যাল গোডাউনে শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) রাত ৩টার দিকে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিটের চেষ্টায় শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
এ আগুনের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে চারজনে। আহত অন্তত ২১ জন।
আগুনের নিয়ন্ত্রণের ফায়ার সার্ভিস দুই জনের মৃত্যুর খবর জানালেও পরে স্বজনরা খোঁজাখুঁজি করে চিলেকোঠা থেকে আরও দুই জনের মরদেহ উদ্ধার করে।
চিলেকোঠা থেকে উদ্ধার করা দুই মরদেহের মধ্যে একজন ভবনটির নিরাপত্তাকর্মী ওলিউল্লাহ ব্যাপারী। অপজনের পরিচয় এখনও জানা যায়নি। এর আগে দুই জনের নিহতের খবর জানান ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিল্লুর রহমান। ভবনটির নিচতলা থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা একজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে। ধারনা করা হচ্ছে তিনি ওই ভবনের তত্ত্বাবধায়ক (কেয়ারটেকার) ছিলেন। আরেকজন নারী বাসিন্দা।
এর মধ্যে দুইজন শিশু, পাঁচজন নারী, ১৪ জন পুরুষ। দগ্ধ ৪ জন পুড়েছে ২৫ শতাংশ।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাজ্জাদ হোসাইন জানান, প্রথমে ছয়টি ও পরে ভয়াবহতা বেড়ে গেলে আরও চারটিসহ মোট ১০টি ইউনিট পাঠানো হয়। পরে আরও বাড়িয়ে ১৯টি করা হয়। তারা ভবনের চারপাশে অবস্থান নিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে। এছাড়াও বাড়ির উপরের লোকজনকে উদ্ধারে ল্যাডার ইউনিট যুক্ত করা হয়েছে।
স্থানীয়ভাবে জানা গেছে, ছয়তলা ভবনের দোতলা থেকে ওপর পর্যন্ত বিভিন্ন মানুষের বাস। আগুন লাগার পর তাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে। অনেকেই তাড়াহুড়ো করে নিচে নেমে আসেন। কেউ কেউ আবার আতঙ্কিত হয়ে ছাদে চলে যান। তাতে ভবনের ছাদে বেশ কিছু লোক আটকা পড়ে। ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা তাদের উদ্ধার করে নামিয়ে নিয়ে আসেন।
ফায়ার সার্ভিস আরও জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এ ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের তিনকর্মীসহ ১৭ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজনকে দগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।
যারা আহত হয়েছেন তাদেরকে মিটফোর্ট ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নতুন করে হতাহত বাড়ার আর শঙ্কা নেই বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
ফায়ার সার্ভিসের প্রাথমিকভাবে ধারণা, রাসায়নিকদ্রব্য থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে।
পুরান ঢাকার বাবুবাজার ব্রিজের পাশে আরমানিটোলায় ছয়তলা ভবনটিতে নিচতলায় কেমিকেলের গোডাউন ও কয়েকটি দোকান রয়েছে এবং দোতলা থেকে পাঁচতালা পর্যন্ত ১৮টি পরিবার বসবাস করে। গ্রিল কেটে, গ্রিল ভেঙে, জানালা ভেঙে, ছাদের দরজা ভেঙে আটকে পড়াদের উদ্ধার করেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।