বিশেষ প্রতিবেদকঃ
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানার বাসিন্দা নাসরিন আক্তার (২৭) গণধর্ষণ মামলার তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ করেছেন। তিনি দাবি করেছেন যে, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে কোর্ট এলাকায় একটি পুলিশি চক্রের সহায়তায় মামলার প্রধান আসামী মোঃ সাইফুল্লা সহ অন্যান্য আসামীদের ছিনতাই করা হয়, যার সঙ্গে পুলিশের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল।
নাসরিন আক্তার জানিয়েছেন, ২০২৫ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাফরুল থানায় গণধর্ষণ মামলা দায়ের করেছিলেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন রুবেল মল্লিক (বিপি নং—৮৪১৩১৫৯০১০, পদবী—ইন্সেপেক্টর)। অভিযোগে বলা হয়েছে যে, তদন্ত কর্মকর্তার মাধ্যমে আসামীদের সন্ধান পেতে নাসরিন আক্তারকে কিছুদিন পর তথ্য দেওয়া হয়। এরপর, ১৯ ফেব্রুয়ারি, নাসরিন তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর থেকে তদন্ত কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করলে তাকে জানান যে, আসামীদের খোঁজ পাওয়া গেছে এবং পুলিশের সাথে যোগাযোগ করতে বলা হয়।
কোর্ট এলাকায় আসামীর সন্ধান পেয়ে, নাসরিন আক্তার তদন্ত কর্মকর্তার নির্দেশে পুলিশের অজ্ঞাতনামা এসআইকে ফোন করেন এবং আসামী সাইফুল্লাকে কোর্টের পুলিশ ক্লাবের সামনে দেখিয়ে দেন। এরপর, পুলিশ সদস্যরা সাইফুল্লাকে গ্রেফতার করার জন্য এগিয়ে আসেন, কিন্তু এসময় কোর্ট এলাকায় থাকা কিছু অপরাধী আসামীর পক্ষের লোকজন পুলিশের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং সাইফুল্লাকে ছিনতাই করে পালিয়ে যায়।
এই ঘটনায় নাসরিন আক্তার অভিযোগ করেছেন যে, কোর্ট এলাকায় দায়িত্ব পালন করা পুলিশ সদস্যরা সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয় ছিল এবং তারা ছিনতাইকারীদের প্রতিরোধ করার কোনো উদ্যোগ নেয়নি। সেখানকার ১০—১২ জন পুলিশ সদস্য শুধুমাত্র সেই ঘটনাটি দেখছিলেন এবং হাসি—ঠাট্টা করছিলেন। এর ফলে, আসামীদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি এবং তারা পালিয়ে যায়।
তদন্ত কর্মকর্তা রুবেল মল্লিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে নাসরিন আক্তারের সাথে কথা বলেন এবং তার শঙ্কার কথা জানান। তিনি বলেছিলেন, ছিনতাইকারীরা খুবই ভয়ংকর এবং আসামীদের পুনরায় গ্রেফতার করতে সাহস পাচ্ছেন না। তবে, তিনি আশ্বস্ত করেন যে, কিছুদিনের মধ্যে আসামীদের গ্রেফতার করতে সহায়তা পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন।
নাসরিন আক্তার আরও অভিযোগ করেছেন যে, কাফরুল এলাকার গোল্ডেন আবাসিক হোটেলের ভিতরে আবারও পতিতালয় চালু করা হয়েছে, যা পুলিশ সদস্যদের সহায়তায় চলছে। তিনি সন্দেহ প্রকাশ করেছেন যে, তদন্ত কর্মকর্তা রুবেল মল্লিক এবং কাফরুল থানার কর্মকর্তারা গোপনে আসামীদের সহায়তা করছেন এবং তাদের পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছেন।
নাসরিন আক্তার জানিয়েছেন যে, এই ঘটনার পর তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এবং আসামীদের হাতে অপহৃত কিংবা হত্যা হওয়ার আশঙ্কা করছেন। তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছেন যেন তদন্ত কর্মকর্তা রুবেল মল্লিক, কাফরুল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং কোর্ট এলাকায় দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয় এবং মামলার আসামীদের দ্রুত গ্রেফতার করা হয়।
এই ঘটনার পর পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রশ্ন উঠেছে এবং দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য নাসরিন আক্তার নিবেদন করেছেন।